বায়ুদূষণ রোধে আতশবাজি তৈরি এবং বিক্রির বিরোধিতায় মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। গত মঙ্গলবার বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং অশোক ভূষণের বেঞ্চ রায়ে জানিয়েছে, দীপাবলিতে রাত ৮টা থেকে ১০ পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব ও কম ধোঁয়ার আতশবাজি পোড়ানো যাবে।
একইসঙ্গে আদালত আরও জানিয়েছে, বাজি কিনতে হবে কোনও লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিক্রেতার কাছ থেকেই। আর অনলাইনেও আতশবাজি বিক্রি করা যাবে না। যদি কোনও ওয়েবসাইট তা করে, তাহলে সেই ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে। অর্থাৎ ‘অফলাইন’ হলেও, সেক্ষেত্রে যাঁর লাইসেন্স আছে তিনিই বাজি বিক্রি করতে পারবেন।
এই খবরেই মাথায় বাজি ব্যবসায়ীদের। পাশাপাশি, এই রায় কালীপুজো ও দীপাবলির আগে স্বীকৃত বাজিবাজারে ক্রেতাদের ভিড়ে প্রভাব ফেলবে কিনা, তা নিয়েও চলছে জল্পনা। শীর্ষ আদালত বাজি পোড়ানোর সময়ও বেঁধে দিয়েছে। তাই বাজি বিক্রির পরিমাণ কমলেও ঠিক কতটা কমবে? সেই হিসেবও কষছেন অনেকে।
কালীপুজোর আগে কলকাতা ও শহরতলি মিলিয়ে মোট পাঁচ-ছ’টি স্বীকৃত বাজিবাজার বসে। সেখানে বাজির দাম তুলনায় বেশি এবং ক্রেতাদের বাজি কেনার বিলও দেওয়া হয়। কিন্তু লাইসেন্সহীন বাজির দোকানের সংখ্যাই বেশি। তা ছাড়া ওই সব দোকান থেকে নিষিদ্ধ শব্দবাজি অনেক সময়েই পাওয়া যায়। ফলে ক্রেতাদের একটা বড় অংশ স্বীকৃত বাজারের চেয়ে লাইসেন্সহীন ব্যবসায়ীদের থেকেই বাজি কেনেন।
যদিও এই রায়ে আশার আলো দেখছেন অনেকে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলছেন, ‘দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে আমাদেরই জয় হল। শব্দবাজি নিয়ে অনেক কথা হয়, কিন্তু আতসবাজিও যে নিঃশব্দে ঘাতকের কাজ করে সেটা সুপ্রিম কোর্ট মেনে নিল।’
আবার শীর্ষ আদালতের নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছেন লাইসেন্সধারী বাজি ব্যবসায়ীরাও। পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর মান্নার কথায়, ‘এই নির্দেশ সুদূরপ্রসারী। এতে বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধ হবে। পরোক্ষে আইনি বাজি শিল্পের উন্নতি হবে।’
তবে শীর্ষ আদালতের রায়কে স্বাগত জানালেও চলতি বছরে বাজির বাজারে এই নির্দেশ কতটা বাস্তবায়িত হবে, আর তার প্রভাব ইতিবাচক না নেতিবাচক তা নিয়ে চিন্তত অনেক ব্যবসায়ী।তবে আশা ছাড়ছেন না কেউই। কারও কারও ভাবনা, পরিমাণে কম কিনলেও নতুন ধরনের দামি বাজি ক্রেতা টানতে পারে। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটবে দীপাবলির রাতেই। সে দিকেই চোখ রাখছেন সকলে।