এ রাজ্যে যাতে পোস্তা বা মাঝেরহাট ব্রিজের মত দুর্ঘটনা আর না ঘটে, সেই লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিল প্রশাসন। এবার উড়ালপুল বা ব্রিজের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ‘ব্রিজ লগবুক’ ব্যবস্থা চালু হচ্ছে রাজ্যে।
এবার থেকে রাজ্যের বড় বড় ব্রিজ বা উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়িত্বে থাকবেন একজন করে ইঞ্জিনিয়ার। তিনি প্রতি সপ্তাহে উড়ালপুল বা ব্রিজটি পরিদর্শন করে তার প্রকৃত অবস্থা কী, তা লগবুকে তুলে ধরবেন। প্রশাসনের নির্দেশ, যদি কোনও ব্রিজে ফাটল, চিড় বা কোনও সন্দেহজনক কিছু দেখেন, সঙ্গে সঙ্গে তা মেরামত করে লগবুকে লিখে রাখতে হবে।
প্রতি মাসেই লগবুকটি ঊর্ধ্বতন অফিসারের কাছে পেশ করা হবে। ব্রিজ বিশেষজ্ঞ কমিটি সেই লগবুক পরীক্ষা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে। আর যদি সরেজমিনে দেখে লগবুকে যদি ঠিক মতো রিপোর্ট করা না হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মূলত অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বা এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার পর্যায়ের অফিসার প্রতি সপ্তাহে বা মাসে ব্রিজগুলিতে নজরদারি চালাবেন।
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা বিশেষজ্ঞ কমিটি বানিয়ে প্রতিটি ব্রিজ বা উড়ালপুলের স্বাস্থ্য সম্পর্কে একটি রিপোর্ট নিয়েছি। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই আমরা ব্রিজ লগবুক চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়াররা প্রতি সপ্তাহে ব্রিজ পরিদর্শন করে লগবুকে তুলে ধরবেন। প্রতি মাসেই তা খতিয়ে দেখবেন এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার। এর ফলে নিয়মিত মনিটরিং থাকবে ব্রিজগুলির উপরে।
নবান্ন সূত্রে খবর, মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনায় চিন্তিত মমতার নির্দেশেই তড়িঘড়ি এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সবকটি ব্রিজ, উড়ালপুল, এমনকি কালভার্টেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মত পূর্তদপ্তর, পুরদপ্তর, সেচদপ্তর, পঞ্চায়েত দপ্তর, এইচআরবিসি-র অধীনে থাকা উড়ালপুলগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।
ইতিমধ্যে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী শিয়ালদহ উড়ালপুল, অরবিন্দ সেতু, উল্টোডাঙা ব্রিজ, বেলগাছিয়া ব্রিজ, বঙ্কিম সেতু, বিজন সেতু, ঢাকুরিয়া ব্রিজ পুরো রক্ষণাবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কালীপুজো মিটে গেলে এই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।