তাঁর তৃণমূল শিবিরে ফিরে আসার নিয়ে জল্পনা চলছিলই। এবার তা আরও উস্কে দিয়ে বৃহস্পতিবার দলের রথযাত্রা কর্মসূচীতে অনুপস্থিত রইলেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। তাঁর দলের তরফে অবশ্য বলা হয়েছে, অসুস্থ থাকায় কর্মসূচীতে যোগ দিতে পারেননি বিশ্বজিৎ। তবে এ বিষয়ে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তাতেই বিশ্বজিৎকে নিয়ে জল্পনায় জোগাচ্ছে ইন্ধন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভা এলাকার নিমতলা থেকে শুরু হয় বিজেপির রথযাত্রা, যার দলীয় নাম ‘পরিবর্তন যাত্রা’। রথ ঢুকে পড়ে বনগাঁ উত্তর বিধানসভা এলাকায়। কিন্তু রথ তাঁর নিজের কেন্দ্রে প্রবেশ করলেও, দেখা যায়নি বনগাঁ উত্তরের বিধায়ককে। ফলে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আবহে বিশ্বজিতের গতিবিধি নিয়ে জল্পনার সুর ক্রমশই চড়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিজেপি-র বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘বিধায়ককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি ৩ দিন ধরে অসুস্থ। তাই আসতে পারেননি।’’ একই কথা বলছেন বিশ্বজিৎও। তিনি বলেন, ‘‘শারীরিক ভাবে অসুস্থতার কারণেই আমি যেতে পারিনি।’’ এমতাবস্থায় দল এবং বিশ্বজিতের সুরের সাদৃশ্য থাকলেও জল্পনা উস্কে দিয়েছে জ্যোতিপ্রিয়র ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য। তাঁর দাবি, “বেসুরো কথা অনেক দিন ধরেই শুরু হয়েছে। দেখতে থাকুন। বিজেপির কোনও নেতা নেই। ভোট যত এগিয়ে আসবে তৃণমূল ততই এগিয়ে যাবে।”
উল্লেখ্য, বছর দেড়েক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বনগাঁ উত্তরের ওই বিধায়ক। কিন্তু তাঁকে ঘিরে নয়া জল্পনার সূত্রপাত কিছু দিন আগে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৬তম বিধানসভার শেষ অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন বিশ্বজিৎ। ওই দিন মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করেন তিনি। বিশ্বজিতের সঙ্গে সেই সময় ছিলেন আরও এক দলত্যাগী, নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহ। এর পর হঠাৎ করেই বিশ্বজিতের জন্য জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে রাজ্য সরকার। যদিও তা প্রত্যাখ্যান করেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক। কিন্তু তার কিছু দিনের মাথায় সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি সাংসদের শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে তোপও দাগেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে, বৃহস্পতিবার দলীয় কর্মসূচীতে বিশ্বজিতের অনুপস্থিতি আলাদা ইঙ্গিত দিয়ে রাখল। এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।