ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতিকে ভাঙিয়ে এনেছিল বিজেপি। এবার রাজস্থানের বিজেপির বিধায়ক মানবেন্দ্র সিংকে ভাঙিয়ে নিজেদের দলে নিয়ে বদলা নিল কংগ্রেস। বিজেপি বিধায়ক তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিংয়ের পুত্র মানবেন্দ্র সিংয়ের এই যোগদানে রাজস্থানে শক্তি বাড়ল কংগ্রেসের। মানবেন্দ্রের বিদায়ের পর ৩০টি আসনের মারোয়াড় অঞ্চলে তেমন প্রভাবশালী কোনও রাজপুত নেতাই রইল না বিজেপি-তে।
বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপিতে যোগ দিয়ে যশবন্ত-পুত্র মানবেন্দ্র বললেন, তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়া ভুল হয়েছিল। এবার রাজস্থান থেকে বিজেপি অপশাসনকে দূর করতে হবে। রাজস্থানে এবার কংগ্রেস জিতবেই। তাঁর কথায়, ‘কমল কা ফুল, বড়ি ভুল’। সঙ্গে বিজেপিকে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারিও দেন, ‘আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে হারের জন্য প্রস্তুত হন’।
কংগ্রেসের দাবি, মানবেন্দ্র সিং কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় রাজপুত ভোটে ভাগ বসাতে পারবে তারা। কেননা মানবেন্দ্রের স্বাভিমান র্যালিতে হাজির ছিলেন রাজপুত নেতারা। তাঁরাই সম্মিলিত আওয়াজ তুলেছে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। তারপর মানবেন্দ্র সিংয়ের স্বাভিমান সেনার পূর্ণ সমর্থনও কংগ্রেস পাবে। পাবে যশবন্ত সিংয়ের সহায়তাও।
রাজপুতদের বিজেপি-র ওপর মোহভঙ্গের সূত্রপাত ২০১৪ থেকে। সেবার লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নেতা যশবন্ত সিংয়ের পরিবর্তে কংগ্রেস প্রাক্তনী, জাঠ সম্প্রদায়ের কর্নেল সোনারাম চৌধুরিকে টিকিট দেয় বিজেপি। নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ে ৮০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন যশবন্ত। প্রবীণ নেতার প্রতি এই আচরণ মেনে নেননি রাজপুতরা। ওই বছরই আগস্টে কোমায় আচ্ছন্ন হন যশবন্ত।
বিজেপি ছেড়েই ২২ সেপ্টম্বর বারমেরে স্বাভিমান যাত্রার আয়োজন করেছিলেন মানবেন্দ্র। তাতে লাখ লাখ সমর্থকের যোগদানে বসুন্ধরাকে বুঝিয়ে ছেড়েছেন তাঁর প্রভাব। অবশ্য রাজপুতরা যে সঙ্গে নেই, গত আগস্টেই তার আঁচ পেয়েছিলেন রাজে। মুখ্যমন্ত্রীর গৌরবযাত্রা মারোয়াড়ে পৌঁছোলে তাঁর বাস তাক করে ঢিল মারে একদল রাজপুত। বাস ছেড়ে হেলিকপ্টারে চড়ে মারোয়ার যাত্রায় ইতি টানেন বসুন্ধরা।
বসুন্ধরার সরকারের বিরুদ্ধে রাজপুতদের ক্ষোভের আরও একটি কারণ আছে। গত বছর জুলাইয়ে মাফিয়া আনন্দপাল সিংকে গুলি করে মারে রাজস্থান পুলিস। ঘটনাচক্রে সে ছিল রাজপুত। আনন্দপালের পরিবার দাবি করে, আত্মসমর্পণ করত আনন্দপাল। সেই সুযোগ না দিয়ে তাঁকে ভুয়ো সঙ্ঘর্ষে হত্যা করেছে পুলিস। শেষমেশ রাজপুতদের মন পেতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে কোনও রাজপুত নেতা আনন্দপালের মৃত্যুর প্রতিবাদ না করায় ক্ষোভ জমাই ছিল। তার ওপর যোধপুরের সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতকে রাজস্থান বিজেপি সভাপতির পদে নিয়োগের বিরোধিতা করে রাজপুতদের আরও চটিয়েছেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী রাজে।