সন্ধ্যায় হাওড়া হাসপাতালের এমার্জেন্সিতে আসতে শুরু করেছে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স। কারও মুখ রক্তাক্ত, কারও হাত ভেঙেছে, কেউ সংজ্ঞাহীন। ততক্ষণে সাঁতরাগাছি ওভারব্রিজে দুর্ঘটনার খবর চাউড় হয়ে গিয়েছে। ভিড় জমতে শুরু করেছে হাসপাতালে। একে একে এসে পোঁছল ১৪ জন জখম ব্যক্তি। জখমদের আত্মীয়দের মধ্যে তীব্র হাহাকার। দু’জনের মৃত্যুর খবর চাউড় হতেই হাসপাতাল জুড়ে কান্নার রোল।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই কার্নিভাল ছেড়ে মুহূর্তে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে হাওড়া হাসপাতালে পৌঁছন মমতা। সোজা চলে যান তিনি সরাসরি চলে যান সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে। ঘুরে ঘুরে আহতদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। খোঁজ খবর নেন। কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না জানতে চান। জখমদের আত্মীয়দের সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকার জখমদের পাশে রয়েছে। চিকিৎসার ভার রাজ্য সরকারের। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরই হাওড়া জেলা হাসপাতালে ১০জন চিকিৎসককে আপৎকালীন চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। মিনিট ২০ হাসপাতালে কাটানোর পরে তিনি বেরিয়ে যান। সেই সময়ে সাংবাদিকদের মমতা জানান, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। জখম এবং মৃতদের জন্য রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। সমস্তরকম সাহায্য রাজ্য সরকার করবে। এই ঘটনার তদন্ত হবে বলে তিনি জানিয়ে দেন।
ততক্ষণে হাওড়া হাসপাতালে এসে গেছেন রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় হাসপাতালে পৌঁছন। তাঁর নির্দেশে এমার্জেন্সিতে অতিরিক্ত তিনজন চিকিৎসককে নিযুক্ত করা হয়।তিনজন গুরুতর জখমকে তিনি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তির নির্দেশ দেন। সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে জখম আরও কয়েকজনকে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাঁতরাগাছি স্টেশনে একই সময়ে ২ এবং ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের আপ লাইনে ট্রেন ঢুকে পড়ে। ওই সময়েই অন্য প্ল্যাটফর্মেও একটি ট্রেন ছিল। এছাড়া ফুট ওভার ব্রিজে আগে থেকেই বেশ কিছু যাত্রী হাঁটছিলেন। ফলে তিনটি ট্রেনের যাত্রীরা এক সঙ্গে ব্রিজে ওঠায় মারাত্মক ভিড় হয়ে যায়। সেই সময়ে এক যাত্রী হোঁচট খেয়ে ভিড়ের মধ্যে পড়ে গেলে তার উপর দিয়ে হুড়মুড়িয়ে আরও কয়েকজন যাত্রী গিয়ে পড়ে। ২০ থেকে ২৫ জন গুরুতর জখম হন। তাদের হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই মৃত্যু হয়েছে দু’জনের।