সরকারের নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকেরা। কেন্দ্র তাঁদের দাবি না মানলে আন্দোলন তীব্রতর হবে, এমনই জানিয়েছেন তাঁরা। এবার ফের তার আভাস পাওয়া গেল। ১৬ই জানুয়ারী থেকে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে করোনার গণটিকাকরণ। ‘সরকার আইন প্রত্যাহার না করলে কোভিডের টিকা নেব না।’ রবিবার এই সুরেই ফের কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিলেন দিল্লীতে আন্দোলনরত কৃষকেরা।
সূত্র অনুযায়ী, দিল্লীতে যাঁরা কৃষক আন্দোলন করছেন তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশের বয়স পঞ্চাশের উপরে। কিন্তু তাতেও বেপরোয়া তাঁরা। পঞ্জাবের মোগা জেলা থেকে আসা চামকৌর সিংহ, দেবেন্দ্র সিংহরা সাফ জানিয়েছেন, দিল্লী ছেড়ে তাঁরা টিকা নেওয়ার জন্য গ্রামে ফিরবেন না। সরকার যতক্ষণ না আইন প্রত্যাহার করবে, তত ক্ষণ টিকা নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই বলে জানান তাঁরা। এপ্রসঙ্গে চামকৌর সিংহ বলেন, “চিকিৎসকদের কাছ থেকে শুনেছি যাঁদের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁরাই প্রভাবিত হচ্ছেন বেশি। দিল্লির রাস্তায় হাজার হাজার গরিব মানুষ রয়েছেন। যাঁদের হাত ধোয়ার মতো কোনও ব্যবস্থা নেই। না আছে মাস্ক। তারা কী ভাবে এই ভাইরাসকে সামলাচ্ছে?” লকডাউনটা শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থে করা হয়েছিল যাতে এই সুযোগে সরকার কোনও বাধা ছাড়াই কৃষি আইন পাশ করিয়ে নিতে পারে, এমনই দাবি করেছেন চামকৌর।
এছাড়াও বহু আন্দোলনকারীর গলায় শোনা গিয়েছে একই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সুর। অনেকেই জানিয়েছেন, কোভিডে মৃত্যুর হার নিয়ে সরকারের দাবিকে তাঁরা বিশ্বাস করেন না। ফিরোজপুর থেকে আসা বলপ্রীত সিংহ বলেন, “আন্দোলনের শুরু থেকেই আমরা এখানে আছি। এক একটি দলে ১০০-২০০ জন। কী ভাবে সামাজিক দূরত্ব মানব !” এই রোগের থেকে রোগের ভয় আরও বেশি মারাত্মক বলে দাবি বলপ্রীতের। “আমাদের জমি, বাড়ি যদি হাতছাড়া হয়, তা হলে টিকা নিয়ে কী লাভ?” জানিয়েছেন বলপ্রীত। তবে চামকৌর বা বলপ্রীতরা টিকা নিতে অস্বীকার করলেও, আন্দোলনকারীদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাঁরা টিকার বিরুদ্ধে যেতে চান না।“আমাদের গ্রামে কোভিডের সংক্রমণ নেই। তবুও বাড়ি ফিরলে আমি টিকা নেব। এখানে টিকা দিতে এলেও তা নেব।” জানিয়েছেন পঞ্জাব থেকে আসা কৃষক কুলদীপ কৌর।