নিন্দুকেরা বলে থাকেন, তাঁর শরীরে নাকি ডবল সিলিন্ডার রয়েছে। একটানা কাজ করলেও তাঁর নাকি ক্লান্তি আসে না, বিশ্রামের প্রয়োজন হয় না। যেমন আজই প্রথমে রানাঘাটের জনসভা, তারপর বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে বৈঠক সেরেই হঠাৎই বাবুঘাটে গঙ্গাসাগরের তীর্থযাত্রীদের বিশ্রাম শিবিরে হাজির হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সন্ধেয় সেখান থেকেই তীর্থযাত্রীদের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বিবেকানন্দের ছবিতে মাল্যদানও করেন তিনি। এরপর সেই সভামঞ্চ থেকেই মমতার বার্তা, “বিবেকানন্দ কারও একার নয়। তিনি সবার।”
উল্লেখ্য, বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীকে হাতিয়ার করে সম্মুখ সমরে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস। প্রত্যেক বছরই এই দিনে মিছিল করে তৃণমূল। এবার স্বামীজির জন্মবার্ষিকীতে উত্তর কলকাতায় মিছিল করবে বিজেপিও। সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতায় আগামীকাল তৃণমূলের হয়ে পথে নামবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে হঠাৎই বাঙালির ভাবাবেগকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি। তাই বাঙালি মণীষীদের নিয়ে টানাটানি করছে গেরুয়া শিবির। এমন আবহে মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা নিঃসন্দেহে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিন বাবুঘাটের মঞ্চ থেকে স্বামীজির মাহাত্ম্য তুলে ধরেন মমতা। শিকাগো ধর্মসভায় স্বামীজির ভাষণ কীভাবে গোটা বিশ্বের কাছে হিন্দুধর্মের মাথা উঁচু করেছিল, তা এদিন আরও একবার মনে করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই তিনি বলেন, “ভারতের মণীষীরা কারও একার সম্পত্তি নন। তাঁরা সকলের। তাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। তাঁরা কোনও জাতি বা ধর্মকে ছোট করে দেখেননি। সকলকে নিয়ে চলতে শিখিয়েছেন।”
এরপর সেই সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বহু সমস্যার মুখে পড়েছে আমাদের দেশ। সেই পরিস্থিতি অতিক্রমও করে এসেছি। তবু দেশকে ভাঙতে পারেনি কেউ। এ দেশকে ভাঙতে দেব না।” বলাই বাহুল্য, গোটা বক্তব্য জুড়ে নাম না করে আসলে বিজেপিকেই কটাক্ষ করেছেন তিনি। এমনকী গঙ্গাসাগর মেলায় যাওয়ার রেলপথ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশও করেন মমতা। এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “সবচেয়ে কঠিন গঙ্গাসাগর যাওয়া। কারণ কুম্ভমেলায় যাওয়ারও রেলপথ আছে। শুধু গঙ্গাসাগর জল পেরিয়ে যেতে হয়।”