১৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে কোভিড টিকাকরণ। তার আগে প্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা সারতে আজ মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই ভার্চুয়াল বৈঠকে অনেকেরই মনে উঁকি দেওয়া একটি প্রশ্নের উত্তর চেয়ে ফেললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ৩ কোটি কোভিডযোদ্ধাকে না হয় বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হল, কিন্তু বাকিদের কী হবে? কোভিডযোদ্ধা ছাড়া বাকিদের টিকাকরণের খরচ রাজ্যকে দিতে হবে কি? প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে অবশ্য এ প্রশ্নের জবাব মেলেনি। বরং পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য দ্বিতীয় দফায় বৈঠক করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
তবে শুধুই টিকাকরণের খরচ নয়, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন টিকার কার্যকারিতা সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক নথিপ্রমাণ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও। এদিনের বৈঠকে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, “কোন দুটো টিকা দেশবাসীকে দেওয়া হবে, তা কেন্দ্রই ঠিক করে দিয়েছে। রাজ্যকে সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া হয়নি। ভ্যাকসিনকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়ার আগে বিজ্ঞানসম্মত মতামত নেওয়া দরকার।” এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, “দুটি ভ্যাকসিনের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি? তাহলে কেন্দ্র আগেভাগেই তা জানিয়ে দিক।”
পাশাপাশি তাঁর আরও প্রশ্ন, “টিকা দু’টি- কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা নিয়ে যথাযথ বৈজ্ঞানিক নথিপ্রমাণ আছে তো?” ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দেওয়ার আগে কী কী পরীক্ষায় তাকে পাস করতে হয়, তারও একটি নথি বৈঠকে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতেই পারে। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবার কোভিড টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নিশ্চিন্ত করেছেন নীতি আয়োগের সদস্য অধ্যাপক বিনোদ কে পাল। তিনি জানিয়েছেন, দুটি কোভিড প্রতিষেধকই ১০০ শতাংশ কার্যকর ও নিরাপদ।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে দুজন মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে একজন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আর অন্যজন পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী। এদিনের বৈঠকে চিকিৎসক, নার্স, পুলিশ, সাফাই কর্মীদের পাশাপাশি পরিবহণ কর্মীদেরও কোভিডযোদ্ধার তালিকায় আনার আবেদন জানান মমতা। তিনি জানিয়ে দেন, কোভিডযোদ্ধাদের নাম নথিভুক্তিকরণ থেকে টিকা পৌঁছে দেওয়ার সমস্ত প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সেরে ফেলেছে রাজ্য সরকার। তবে কোভিডযোদ্ধা ছাড়া বাকিদের বিনামূল্য টিকাকরণ কি সম্ভব? আপাতত আজকের বৈঠকে সেই প্রশ্নের উত্তর অধরা।