‘যে কটা পদ্ম ২০১৯ সালে ফুটিয়েছিলেন, সব ছুঁড়ে ফেলে দিন। বহিরাগতদের দিয়ে বাংলার কৃষ্টিকে নষ্ট করার চেষ্টা বিজেপির। বিজেপিকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করুন।’ দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে জনসভা থেকে এভাবেই বিজেপি বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেন যুব তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের নাম করেই অভিষেকের বক্তব্য, ‘উত্তরবঙ্গের অনেক জায়গায় উনিশের ভোটে পদ্ম ফুটেছে। আপনারা বালুরঘাটেই বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারকে জিতিয়েছেন ভোট দিয়ে। কিন্তু জেনে রাখুন, একুশের ভোটে সব বানের জলে ভেসে যাবে।’
প্রসঙ্গত, একুশের আগে সংগঠনের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে চারদিনের সফরে উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার গঙ্গারামপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন মাঠে জনসভা করেন তিনি। সেখান থেকেই আক্রমণ শানান বিজেপির বিরুদ্ধে। ‘তোলাবাজ ভাইপো’ থেকে ‘বহিরাগত’ – এক সভায় জবাব দিলেন এই সবকিছুরই। অভিষেক বলেন, ‘বিজেপি নেতারা আমাকে বলে ‘তোলাবাজ ভাইপো’। আমি বলছি, তোলাবাজির প্রমাণ দেখান। যদি তা পারেন, তবে এখানে ফাঁসির মঞ্চ গড়ুন, আমি মৃত্যুবরণ করব। কারণ, আমাদের সামনে আদর্শ ক্ষুদিরাম বসু। প্রাণ দিতে আমরা ভয় পাই না। তবে তার আগে প্রমাণ দিন তোলাবাজির।’
অভিষেকের সভার আগে বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার তাঁকে দক্ষিণ দিনাজপুরে ‘বহিরাগত’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। এদিনের সভায় তারও জবাব দেন যুব তৃণমূল সভাপতি। তাঁর কথায়, ‘আমি বাঙালি, ব্রাহ্মণ সন্তান, আমাকে বলছে ‘বহিরাগত’! আর যাঁরা বাংলা বলতে, লিখতে, পড়তে পারে না, তাঁরা কী? আমি নাম করে বলছি, কৈলাস বিজয়বর্গীয় বহিরাগত। দিল্লীর নেতারা পরিচালনা করবেন দিনাজপুরকে, গঙ্গারামপুরকে? মনে রাখবেন, বাংলা গুজরাত নয়। বাংলার মানুষ রক্ত দেবে, প্রাণ দেবে, তবু মাথা নোয়াবে না।’ বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তাঁর আরও বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম নরেন্দ্র মোদীর রিপোর্ট কার্ডের ভিত্তিতে লড়াই হোক।
অন্যদিকে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে রাজ্যে সাফল্য পেলেও তার পরবর্তী সময়ে বিজেপির বড় কোনও নেতা বা প্রধানমন্ত্রীকে বাংলায় দেখা যায়নি বলে দাবি অভিষেকের। এ প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালের পর বিজেপির কোনও বড় নেতাকে বাংলায় দেখা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী-সহ বিজেপির বড় নেতাদের দেখা যায়নি। সারা বছর তৃণমূল মানুষের সঙ্গে থাকে। ভোটের সময় বিজেপি আর পরিষেবার সময় তৃণমূল। বাংলাকে গুজরাত আর দিল্লির হাতে বন্ধক রাখার চেষ্টা বিজেপির। আগামী নির্বাচনে কড়ায়-গন্ডায়, ইঞ্চিতে-ইঞ্চিতে মানুষ জবাব দেবে।’ এরপরই তিনি সভায় উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে বলেন ‘যে কটা পদ্ম ২০১৯ সালে ফুটিয়েছিলেন, সব ছুঁড়ে ফেলে দিন। বিজেপিকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করুন।’