ফের প্রকাশ্যে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মনোমালিন্য। অতি সম্প্রতি রাজ্যপালের করা মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে শাসকদলের অন্দরে। ‘বাংলায় শান্তি আসুক, নির্বিঘ্নে শেষ হোক বিধানসভা ভোট।’ পূর্ব মেদিনীপুর সফর থেকে এমনই মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। যা নিয়ে রাজ্যপালকে আবার তাঁর এক্তিয়ার সম্বন্ধে স্মরণ করিয়ে দিল তৃণমূল।
বুধবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক থেকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে তীব্র কটাক্ষ করেন বারাসাতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি জানান, সাংবিধানিক ভাবে রাজ্যপালের সবসময় নিরপেক্ষ থাকা উচিত। প্রশাসনিক কাজে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর মতামত দেওয়া উচিত। কিন্তু এক্ষেত্রে বরাবরের ব্যতিক্রম জগদীপ ধনকর, এমনই দাবি করে তৃণমূল। এপ্রসঙ্গে কাকলির অভিযোগ, একপেশে হয়ে রাজভবনকে বিজেপির পার্টি অফিসে পরিণত করছেন রাজ্যপাল। কাকলি অবিলম্বে তাঁর অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। চিঠিও দেওয়া হয়েছে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে। “সারা ভারত যেমন বিজেপির অপশাসনে ধ্বংসে পরিণত হয়েছে, রাজ্যপাল চান, বাংলাতেও তেমন হোক। কিন্তু বাংলার ঐতিহ্য উনি কোনওভাবেই ধ্বংস করতে পারবেন না।” এই বলে ধনকরের দিকে তোপ দেগেছেন তৃণমূল সাংসদ।
প্রসঙ্গত, এর কয়েকদিন আগেই তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, রাজ্যপালকে অপসারণের দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছে তারা। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দিয়ে ধনকর মন্তব্য করেন, ঠাকুরের কাছে তিনি প্রার্থনা করেছেন বাংলায় শান্তির পরিবেশ ফিরে আসুক। নির্বিঘ্নে হোক বিধানসভা ভোট। পাশাপাশি এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী এবং বাংলার তৃণমূল সরকারকে ফের একহাত নেন রাজ্যপাল। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী নিজে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছেন না। এও বলেন, আমরা সবাই ভারতবাসী। ভারতের মধ্যে কেউ বহিরাগত নন। এমন ভাবনা আসলে সংবিধানের মূলে কুঠারাঘাত করা বলে মন্তব্য করেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি তাঁর আরও অভিযোগ, আমফানের পর বিকল হয়ে গিয়েছে রাজ্য সরকার। দুর্যোগের পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, প্রশ্ন তোলেন তিনি। করোনায় দুর্নীতি নিয়ে আদালত তদন্তের নির্দেশ দিলেও রাজ্য তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। সব মিলিয়ে রাজ্যপাল বনাম রাজ্যের শাসক দলের বিরোধিতা ও চাপানউতোর চরমে উঠেছে। যা নিয়ে প্রাক-ভোটপর্বে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি।