বিরোধীদের কথা মন দিয়ে শোনা উচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর, সংসদেও তাঁর আরও বেশি উপস্থিতি জরুরি। নিজের বই ‘দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ার্স ২০১২ থেকে ২০১৭’-তে এমনটাই লিখেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।
গত বছরের আগস্টে প্রয়াত হয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তার আগে ২০১২ থেকে ‘১৭ পর্যন্ত সময়পর্বে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজের কার্যকাল নিয়ে এই ‘দ্য প্রেসিডেনশিয়াল ইয়ার্স, ২০১২-২০১৭’ বইটি লেখেন তিনি। সেই বইটিতেই বর্তমান বিজেপি সরকার এবং নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তাঁর মতামত উঠে এসেছে। উঠে এসেছে রাষ্ট্রপতি-পূর্ব জীবনে তাঁর নিজের দল কংগ্রেস নিয়ে তাঁর বিভিন্ন পর্যবেক্ষণের কথাও।
সংসদে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিই প্রশাসনিক কাজকর্মে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে বলেও নিজের বইতে লিখেছেন প্রণব। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির লেখায়, ‘দ্বিতীয় দফায় পূর্বসূরির থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সংসদে উপস্থিতি বাড়িয়ে নিজের নেতৃত্বগুণ সকলের সামনে তুলে ধরতে পারেন। তাতে প্রথম দফায় যে সংসদীয় সঙ্কটের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে, তার মুখোমুখি অন্তত হতে হবে না। জওহরলাল নেহরু হন বা ইন্দিরা গান্ধী, অটলবিহারি বাজপেয়ী অথবা মনমোহন সিংহ, এঁরা সকলেই কিন্তু সংসদে নিজেদের উপস্থিতি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।’
বিরোধীদের ওজর আপত্তিকে গুরুত্ব না দিয়ে শুধুমাত্র সংখ্যার জোরে গত কয়েক বছরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক বিতর্কিত বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রণবের বক্তব্য, ‘বিরোধীদের বক্তব্য অবশ্যই শোনা উচিত প্রধানমন্ত্রীর। সংসদে আরও বেশি করে নিজের বক্তব্য তুলে ধরা উচিত। সংসদের মতো ফোরামকে ব্যবহার করে নিজের মতামত যেমন জানাতে পারেন, তেমনই সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিয়ে বিরোধীদেরও সন্তুষ্ট করতে পারেন। আবার দেশবাসীর কাছে সঠিক তথ্যও পৌঁছে দিতে পারেন।’ ওই প্রসঙ্গে পূর্বতন ইউপিএ জমানায় নিজের ভূমিকার কথাও টেনে এনেছেন প্রণব। জানিয়েছেন, সেইসময় সর্বদা বিরোধী নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতেন তিনি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইউপিএ এবং এনডিএ – দুই শিবিরের অভিজ্ঞ নেতাদের মতামতই নিতেন।