এবার বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের বাঙালি বৈজ্ঞানিক তপন মিশ্র। তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, তিন বছর আগে চক্রান্তস্বরূপ তাঁকে বিষ খাওয়ানো হয়েছিল। বেঙ্গালুরুতে ইসরোর হেডকোয়ার্টারে একটি প্রোমোশনাল ইভেন্ট চলাকালীন খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে বিষ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। এই মুহূর্তে ইসরোর সিনিয়র অ্যাডভাইজারের পদে রয়েছেন তপন মিশ্র। এর আগে তিনি ইসরোর আহমেদাবাদের রিসার্চ সেন্টারের দায়িত্বে ছিলেন। এই মাসের শেষেই স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার কথা তাঁর। তার আগেই এই ধরনের বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তপনবাবু।
মঙ্গলবার একটি ফেসবুক পোস্টে এই দাবি করেন তিনা। তপনবাবু জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ২৩শে মে বেঙ্গালুরুতে একটি ইভেন্ট চলাকালীন মধ্যাহ্নভোজের পর স্ন্যাক্সের সময় ধোসা, চাটনির সঙ্গে মিশিয়ে আর্সেনিক ট্রায়োক্সাইড দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। এই বিষ সাংঘাতিক। কিন্তু পরিমাণে কম দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ফলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর শরীরে প্রভাব পড়েনি। তারপর বেশ কিছুদিনের মধ্যেই শরীরে সমস্যা দেখা যায়। তার মধ্যে অন্যতম ছিল মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ত্বকে র্যাশ বের হওয়া, জ্বালাপোড়া করা, ফাঙ্গাল ডিজিজ ইত্যাদি। যে ফেসবুক পোস্টে এই কথা তিনি বলেছেন তাঁর শিরোনাম ‘লং কেপ্ট সিক্রেট’ অর্থাৎ ‘বহুদিন ধরে লুকিয়ে রাখা গোপন কথা’। এই পোস্টেই তিনি সবিস্তার জানিয়েছেন তাঁর অভিযোগ।
এপ্রসঙ্গে তপন মিশ্র আরও দাবি করেছেন, ২০১৭ সালের জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক তাঁর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে জানান, তাঁর শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। তারপরে তিনিই চিকিৎসকদের বলেন, তাড়াতাড়ি তাঁকে সুস্থ করে তুলতে। পাশাপাশি নিজের বক্তব্যের সমর্থনে দিল্লির এইমসের একটি মেডিক্যাল রিপোর্টও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন বিজ্ঞানী। সেখানে দেখা যাচ্ছে এইমসে আর্সেনিক টক্সিকেশনের চিকিৎসা হয়েছিল তাঁর।
বৈজ্ঞানিকের অভিযোগ, কোনও গুপ্তচর তাঁকে খুন করতে চেয়েছিল। তিনি দেশের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সিন্থেটিক অ্যাপারচার র্যাডারের মতো অত্যাধুনিক সরঞ্জাম বানাতে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। এই সব সরঞ্জামের বড় ভূমিকা ছিল দেশের সুরক্ষায়। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যই এই হামলা চালানো হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তপনবাবু। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে তিনি জানিয়েছেন, অবিলম্বে ভারত সরকার এই ঘটনার তদন্ত শুরু করুক। নইলে আগামী দিনে অন্য কোনও বৈজ্ঞানিকও এই সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন বলেই তাঁর ধারণা। যদিও এই অভিযোগের পরে এখনও পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা হয়নি ইসরোর তরফে।