দূষণ নীতি মানা হচ্ছেনা— এই অভিযোগে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের নির্দেশে গত ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাত্রি থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ডিভিসির নিয়ন্ত্রণাধীন দুর্গাপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। যার ফলে নতুন বছরের শুরুতেই রুজিরুটি বন্ধ হওয়ার জোগাড় কর্মীদের। তাই কারখানা বন্ধের বিরুদ্ধে এবার শুরু হল জোরদার শ্রমিক আন্দোলন। শনিবার সকাল থেকে এ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দুর্গাপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। অভিযোগ, কারখানার স্থায়ী শ্রমিকরা ঢুকতে গেলে অন্যান্য শ্রমিকরা বাধা দেন তাঁদের। উভয়ের মধ্যে বচসা শুরু হয়ে যায়। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ জওয়ানরা বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও সুফল মেলেনি। গেটপাস দেখিয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরাই কারখানার ভিতরে ঢুকে গিয়ে শক্তি ভবনের সামনে বসে পড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৬ সালে দুর্গাপুরের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের অঙ্গদপুরে গড়ে ওঠে ডিটিপিএস। চারটি ইউনিটের মধ্যে তিনটি আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কোনওরকম ৪ নম্বর ইউনিটটি চলছিল। লকডাউনের সময় থেকে তাও অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এবার কেন্দ্রীয় নিদানে বন্ধই হয়ে গেল দুর্গাপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একমাত্র ইউনিটটি। ফলে আর কাজ না থাকায় কারখানারও ঝাঁপ পড়ল। এভাবে কারখানা বন্ধের বিরুদ্ধে শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলে দুর্গাপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভে সামিল হন তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির কর্মী, সমর্থকরা। শ্রমিক নেতৃত্বের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার ভোটের আগে পরিকল্পিতভাবে দুর্গাপুরের ইউনিটটি বন্ধ করে দিল। স্থায়ীদের ডিভিসির অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হলেও প্রায় ৬০০ অস্থায়ী শ্রমিক কাজ হারালেন।
৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপিতা স্বরূপ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘আমরা অনেক আগে থেকেই পঞ্চম ইউনিট তৈরির দাবি করেছিলাম। কারণ, চতুর্থ ইউনিটটির বয়স ৩৮ বছর হয়ে গিয়েছিল। এ ধরনের একটি ইউনিটের আয়ু সাধারণত ২৫বছর। সেক্ষেত্রে নতুন ইউনিট বসানোয় একটু তৎপরতা থাকলে এতগুলো মানুষ একসঙ্গে বেকার হয়ে পড়তেন না। কেন্দ্রের এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে এবার আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু হল।’ পাশাপাশি কারখানার শ্রমিকদেরও হুঁশিয়ারি, সোমবার থেকে কারখানায় স্থায়ী শ্রমিক-সহ কোনও আধিকারিককেও আর ঢুকতে দেওয়া হবে না। যতক্ষণ না কেন্দ্রীয় সরকারের চক্রান্ত বন্ধ হচ্ছে, ততক্ষণ তাঁরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা।