যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। বাংলার এমন প্রবাদের জলজ্যান্ত উদাহরণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দোকানে আলু-বরবটির তরকারি রান্নায় অবলীলায় হাত লাগাতে পারেন তিনি। আবার দক্ষ প্রশাসক হয়ে কন্যাশ্রী-সবুজসাথীর মতো মতো একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করাতেও তাঁর জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু ‘বহিরাগত’ বিজেপি সেসবের কি বুঝবে? এমনই বলছে ওয়াকিবহাল মহল।
ব্যাপারটা কি? সম্প্রতি ২ দিনের সফরে বোলপুরে গিয়েছিলেন মমতা। প্রথমদিন পদযত্রা করেন। বাংলার অগ্নিকন্যার ডাকে পা মেলান প্রায় আড়াই লাখ জনতা। দ্বিতীয় দিন আদিবাসী পাড়ায় দিয়ে সেখানকার মানুষদের কথা শোনেন। সুবিধে-অসুবিধের খোঁজ নেন। সেই সময়ই এলাকার একটি দোকানে চা খেতে ঢোকেন মমতা। দেখেন দোকানি রাঁধছেন আলু-বরবটির তরকারি। সেই রান্নাতেও হাত লাগান মমতা। মুখ্যমন্ত্রীকে বড় কড়াইতে খুন্তি নাড়তে দেখে ভিড় জমান আশপাশের মানুষ।
যারা মমতাকে চেনেন, তাঁরা জানেন মমতা এমনই। তাই তো তিনি বাঙালির ঘরের মেয়ে। কিন্তু মমতার এই রান্না করা নিয়ে খোঁচা দিতে গিয়ে মুখ পুড়ল বিজেপির। বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ব্যঙ্গ করে টুইটে লেখেন, ‘যে কাজ ৫ মাস পর করতে হবে, তা এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছেন দিদি।’ এটাকে নারী বিদ্বেষী মন্তব্য বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে টুইট করেছেন তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান।
বসিরহাটের সাংসদ লেখেন, ‘আদ্যন্ত নারী বিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। যে সব মহিলা তাঁদের পরিবার সামলান, রান্না করেন তাঁদের প্রত্যেককে অপমান করেছেন। এই মুহূর্তে ভারতের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বারবার বিজেপি তাঁকে অপমান আর নিশানা করছে বিজেপি।’
বরাবর কালীঘাটের বাড়িতে মমতা নিজে শ্যামা পুজোর ভগ রান্না করেন। শুধু তাই নয়, নিজে হাতে অতিথিদের খাবার পরিবেশন করতেও দেখা যায় তাঁকে। ২০১৯ লোকসভা ভোটের সময় দীঘার একটি দোকানে ঢুকে নিজে হাতে চা করে খাইয়েছিলেন সবাইকে। এই সহজ-সরল জীবন যাপনই মমতার ইউএসপি। এবার সেটাকেই আক্রমণ করে তোপের মুখে পড়লেন কৈলাস।