ভারতে সম্প্রতিই খোঁজ মিলেছিল করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেনের। এবার কলকাতাতেও এক জনের শরীরে পাওয়া গেল কোভিডের নয়া স্ট্রেন। ব্রিটেনে যা ছড়িয়ে পড়ার কারণে ইতিমধ্যেই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, এটি আগের করোনা ভাইরাসের থেকে ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক৷ যথারীতি আশঙ্কা ছড়িয়েছে কলকাতাবাসীর মধ্যে।
আক্রান্ত হয়েছেন কলকাতা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন লন্ডন ফেরত এক যুবক। তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এক শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তার পুত্র৷ এই যুবকের সঙ্গে আসা একই বিমানের লন্ডন ফেরত মোট সাতজনের নমুনা কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিকেল এন্ড জিনোমিক্স ( এন আই বি এম জি) তে জিনোম সিকোয়েন্স এর জন্য পাঠানো হয়েছিল৷ এরপর একজনের নমুনা সন্দেহজনক হওয়ায় দিল্লীর ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলে (এনসিডিসি) পাঠানো হয়৷ সেই রিপোর্ট রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো হয়েছে৷ সম্ভবত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসাধীন ওই যুবকই নতুন স্ট্রেনে আক্রান্ত, সূত্র অনুযায়ী জানা গেছে এমনটাই।
উল্লেখ্য, এই যুবক ২০শে ডিসেম্বর ভোররাতে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন। এই বিমানের আরও এক যাত্রীর বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ আসে। তাকে রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ভর্তি করা হয়।পরবর্তীতে তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট কলকাতা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন করলে তা অবশ্য নেগেটিভ আসে।
নতুন স্ট্রেনে আক্রান্ত এই যুবককে দমদম বিমানবন্দর থেকেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়৷ দু’জন আক্রান্তকে সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে আলাদা ঘরে রাখা হয়৷ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসাধীন যুবক তার আশপাশের বিমানের আসনের যাত্রী সমেত মোট সাতজন এর নমুনা জিনোম সিকোয়েন্স এর জন্য কল্যাণীর এনআই বিএন জিতে পাঠানো হয়৷ তার মধ্যে ৬ জনের নমুনায় কিছু পাওয়া যায়নি। একজনের নমুনা সন্দেহজনক হওয়ায় সেই নমুনা আবার দিল্লির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডিজিজ কন্ট্রোল পাঠানো হয়৷ সম্ভবত এটিই পজিটিভ, অনুমান করা হচ্ছে।
এবিষয়ে জনস্বাস্থ্য আধিকারিক তথা চিকিৎসক কাজল কৃষ্ণ বণিক জানিয়েছেন, ‘মানুষ যাতে আতঙ্কিত না হন তবে সতর্ক থাকেন। দুর্গাপুজোয় মানুষ যা সতর্কতা দেখিয়েছেন বড়দিনে তা উধাও। মাস্ক না পড়ে যেভাবে বেরিয়েছেন তা আতঙ্কের বিষয়। বর্ষশেষের আনন্দে মাততে গিয়ে তার পরিণাম যেন ভয়ঙ্কর না হয়ে যায় তা মানুষকেই মাথায় রাখতে হবে৷ মানতে হবে সমস্ত স্বাস্থ্য বিধি৷’ কাজলবাবু আরও জানান, করোনা ভাইরাসের নয়া স্ট্রেনে ভ্যাকসিন কাজ করবে না তার কোনো প্রামাণ্য তথ্য নেই। ব্রিটেনে যেভাবে নয়া স্ট্রেন ছড়িয়েছে, ভারতে তা আদৌ সেভাবে গণহারে ছড়াবে কিনা তাও প্রমাণিত নয়। কারণ ইউরোপের মানুষের তুলনায় ভারতীয়দের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বেশি৷ তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মানুষের বেপরোয়া মনোভাব বিপদ ডেকে আনতে পারে।
এই নিয়ে পুরো দেশে মোট কুড়িজন করোনার নতুন স্ট্রেনে আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে
দিল্লীতে ৯ জন, বেঙ্গালুরুতে ৭ জন, হায়দ্রাবাদে ২ জন, পুনেতে ১জন ও কলকাতাতে ১ জনের শরীরে মিলেছে ভাইরাসের নমুনা।