গত মাসে ভারতের অর্থনীতির বিভিন্ন সেক্টরে চাহিদা বাড়া এবং জিএসটি আদায় সন্তোষজনক হওয়াকে অনেকেই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত বলে মনে করছেন। তবে এবার ডোমেস্টিক রেটিং এজেন্সি ইকরা স্পষ্ট জানিয়ে দিল, অর্থনীতির এই তেজি ভাব স্থায়ী নাও হতে পারে। ইকরার প্রিন্সিপাল ইকনমিস্ট অদিতি নাভার বলেন, ‘গত অক্টোবরে অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। উৎপাদনও বেড়েছে। কিন্তু এখনই ভাবা উচিত নয় যে অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ঘটছে। লকডাউনের সময় যে চাহিদা সৃষ্টি হয়েছিল, তা এতদিনে পূরণ হচ্ছে। তাছাড়া অক্টোবর ছিল উৎসবের মাস। তার ফলে বাড়তি চাহিদা সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু এই চাহিদা স্থায়ী নাও হতে পারে।’ ইকরার মতে, আগামী দিনে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে কিনা তা নির্ভর করবে সরকারি ব্যয়বরাদ্দের ওপরে। কয়েকটি রাজ্যে নতুন করে কোভিড সংক্রমণ বেড়েছে। ফলে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করতে হচ্ছে। তাতে অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ব্যাহত হতে পারে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে অক্সফোর্ডের দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ প্রিয়াঙ্কা কিশোর ভারতের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে একটি রিপোর্ট লেখেন। তাঁর মতে, আগামী পাঁচ বছর ভারতের অর্থনীতির বিকাশ হবে বছরে ৪.৫ শতাংশ হারে। করোনার আগে বার্ষিক বিকাশ হচ্ছিল গড়ে ৬.৫ শতাংশ। ব্যালান্স শিটে লেখা হয়েছে, ২০২০ সালের আগেই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েছিল ভারতের অর্থনীতি। বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার লাভের পরিমাণ কমছিল। বহু ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ব্যাঙ্ক বহির্ভূত আর্থিক সংস্থাগুলি ক্ষতির মুখে পড়েছিল। চাকরির বাজারে সংকট দেখা দিয়েছিল। কোভিড অতিমহামারী আগামী দিনে এই সমস্যাগুলি আরও বাড়িয়ে তুলবে। অক্টোবরের মাঝামাঝি আইএমএফ থেকেও বলা হয়, এশিয়ার মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ভারতের অর্থনীতির। চলতি আর্থিক বছরে ভারতের অর্থনীতি সম্ভবত সংকুচিত হবে ১০.৩ শতাংশ।