ফের জঙ্গলমহলের বুকে বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য বিজেপি। আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে ধাক্কা খেলেন খোদ দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রকাশ্যে তিনি ছত্রধর মাহাতোকে বিজেপিতে যোগদানের জন্য ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ডাক সরাসরি ফিরিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের নতুন রাজ্য সম্পাদক। আর তার জেরেই এবার বেআব্রু হয়ে গেল জঙ্গলমহলের বুকে বিজেপির ছন্নছাড়া দশা।
এটাও পরিষ্কার হয়ে গেল যে, আদিবাসী সমাজে গেরুয়া শিবিরের গ্রহণযোগ্যতা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। যার ফলে রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ধাক্কা খেতে চলেছে গেরুয়া শিবির। একই সঙ্গে এটাও জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক ভাবে ছত্রধরকে জব্দ করতে না পারে এবার কেন্দ্র সরকার এনআইএ-কে লেলিয়ে দিচ্ছে ছত্রধরকে গ্রেফতার করার জন্য। তার জেরেই এনআইএ এবার কলকাতা হাইকোর্টে ছত্রধরকে গ্রেফতারির আবেদন জানাতে চলেছে। সেখানে বিফল হলে তাঁরা যাবে সুপ্রিম কোর্টেও। মূল লক্ষ্য যেনতেন প্রকারণে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে ছত্রধর মাহাতোকে জঙ্গলমহল ছাড়া করার পাশাপাশি তাঁকে হাজতে পোরা।
গত সোমবার দিলীপ ঘোষ গোপীবল্লভপুরে হওয়া বেশ কিছু জগদ্ধাত্রী পুজো পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তার মধ্যে একটি জায়গায় তিনি প্রকাশ্যেই ছত্রধর মাহাতোকে বিজেপিকে যোগদান করার আহ্বাণ জানান। তিনি বলেন, “ছত্রধর মাহাতোকে বলছি, আপনি যে লড়াই মানুষের জন্য করেছেন, যার জন্য করেছেন, তিনি আপনাকে জেলে পাঠিয়েছিলেন। এখন ভোটের স্বার্থে আপনাকে জেল থেকে বের করে নিজের দলে রাজ্য সম্পাদকের পদ দিয়ে, আপনার স্ত্রীকে চাকরি দিয়েছেন। আপনি বিজেপিতে আসুন। বিজেপি আপনাকে সম্মান দেবে।” কার্যত দিলীপের এই আহ্বানেই পরিষ্কার হয়ে যায় যে, জঙ্গলমহলের বুকে রীতিমত কোণঠাসা হয়েছে বিজেপি। আর তা থেকেই বার হতে এখন ছত্রধর মাহাতোকে নিজেদের দিকে টানতে চাইছে গেরুয়া শিবির।
যদিও দিলীপের সেই ডাকে একদমই সাড়া দেননি ছত্রধর মাহাতো। উল্টে দিলীপের প্রতি কটাক্ষ হেনে জঙ্গলমহলের এই ভূমিপুত্র জানান, “দিলীপবাবুরা অতীত ইতিহাসটা ভুলে গিয়েছেন। আমাকে দিদিমণি জেলে পোরেননি। পুরেছিল বামফ্রন্ট সরকার। দিদিমণিও আমাজে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনেনি। আদালত আমাকে জামিন দিয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক যোগ খুঁজতে যাওয়া মূর্খদের সাজে। আর যে বামেরা আমাকে জেলে পুরেছিল তাঁরাই এখন জামা বদলে গেরুয়া জামা পড়ে জঙ্গলমহলে ঢুকে নতুন করে সন্ত্রাস শুরু করেছে। বিজেপি আর বাম এখন একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। দিনে রাম, রাতে বাম। এদের থেকে মানুষের সজাগ থাকা উচিত।”