আজ, সোমবার থেকে ফের জেলা সফর শুরু করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই জেলা সফরে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক দুই ধরণের সভাই তিনি করবেন। কিছুদিন আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অমিত শাহ বাঁকুড়া সফর করে গিয়েছেন। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর এই সভা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
রবিবার দুপুরেই বাঁকুড়া পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। আজ, সোমবার খাতড়ায় সিধু কানু স্টেডিয়ামে তিনি একটি সরকারি সভায় যোগ দেবেন। সেখান থেকে উপভোক্তাদের হাতে সরকারি সাহায্য তিনি তুলে দেবেন। এছাড়া একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধনের কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। আগামিকাল, মঙ্গলবার তিনি বাঁকুড়া রবীন্দ্র ভবনে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। তার আগে প্রধানমন্ত্রীর সাথে মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠক রয়েছে। করোনা টিকা বন্টন, এক্ষেত্রে কে বা কারা অগ্রাধিকার পাবেন। যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা আছে। এর পরের দিন বুধবার শুনুকপাহাড়িতে তিনি যোগ দেবেন দলীয় সভায়। বৃহস্পতিবার তাঁর কলকাতায় ফিরে আসার কথা।
রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর ঘিরে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ভাবে আরও গতি আসবে জেলায়। নবান্ন সূত্রে অবশ্য জানানো হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর এই জঙ্গলমহল সফর আগে ভাগেই নির্ধারিত করা ছিল। ফলে পাল্টা সভা বা বৈঠকের প্রসঙ্গ উড়িয়ে দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে অমিত শাহ বাঁকুড়ায় এসে বৈঠক, আদিবাসী পরিবারে খাওয়া দাওয়া করে যাওয়ার পরে বিজেপি শিবির জঙ্গলমহলে তাদের রাজনৈতিক জয় বলে প্রচার শুরু করেছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী তার এই সফরে প্রশাসনিক বৈঠক বাঁকুড়া শহরে সীমাবদ্ধ না রেখে, আদিবাসী অধ্যুষিত খাতড়া এলাকায় করছেন।
প্রশাসনিক আধিকারিকদের সামনেই আদিবাসী এলাকা ও জঙ্গলমহল এলাকায় কি কি ধরণের কাজ হয়েছে। রাজ্য সরকার কি কি পরিকল্পনা করছে তা নিয়ে যাবতীয় আলোচনা হবে। তৃণমূল নেতারা অবশ্য বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষের জন্যেই কাজ করেন। তাই লোকদেখানো খাওয়া দাওয়া করে বিজেপি যে বার্তা দিতে চাইছে তা সঠিক নয়। রাজনৈতিক ভাবেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তৃণমূল সুপ্রিমোর এই সফর। কারণ, লোকসভা ভোটে বাঁকুড়া জেলার দুই আসনেই হেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। খোদ মন্ত্রী হেরে গেছেন ভোটের লড়াইয়ে। ফলে ভোটের হাওয়া যখন রাজ্য জুড়ে বইতে শুরু করেছে, তখন মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তা ছাড়া জঙ্গলমহলের আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্কের দিকে চেয়ে আছে বিজেপি। তাই জঙ্গলমহলের এই জেলা থেকেই তিনি আগামী বিধানসভা নির্বাচনের সুর বেঁধে দিতে পারেন। দু’সপ্তাহ আগেই অমিত শাহ বাঁকুড়ায় কর্মীসভা করে তৃণমূল সরকারকে উপড়ে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন। ফলে সেই একই জেলা থেকে সভা করে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দোপাধ্যায় কি সুনির্দিষ্ট বার্তা দেন সকলে এখন সে দিকেই চেয়ে। জেলা তৃণমূল সুত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সভায় প্রতি ব্লক থেকেই লোক আসবে। দলীয় কর্মীদের সে ভাবেই প্রচার করতে বলা হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে যুযুধান দুই পক্ষ যখন একই জায়গা থেকে সভা করছেন। তাতে বিধানসভা ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে এটা বলাই যায়৷