দেশের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে তাঁর সরকার। একথা প্রায়শই শোনা যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে। তবে এখনও তেমন কিছু চোখে পড়েনি দেশবাসীর। এমনকি কৃষকরা নিজেরাই জানেনা যে, তাঁদের আয় আদৌ বেড়েছে, না কমেছে!
তবে এ রাজ্যের ছবি অন্যান্য রাজ্যের থেকে আলাদাই। বাংলার কৃষকদের আয় দেশের বাকি রাজ্যের থেকে অনেক বেশি বেড়েছে। একথা জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন, গত সাত বছরে রাজ্যে কৃষকদের আয় ৩.২ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্যশস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নূন্যতম সহায়ক মুল্য ধারাবাহিকভাবে বাড়ানোর ফলেই বাংলার কৃষকের সামগ্রিক ভাবে উপকার পেয়েছেন। সম্প্রতি কলকাতার বনিকসভা সিআইআই ও কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা স্মল ফার্মারস এগ্রি বিজনেস কনসর্টিয়াম এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য দিয়েছেন তিনি।
প্রদীপ বাবু আরও জানান ‘চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত উৎপাদন আমাদের দেশের কৃষিক্ষেত্রের প্রধান সমস্যা। ভারতের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ধান উৎপাদনে এক নম্বর হলেও কেন্দ্র ৭০ থেকে আশি শতাংশ চাল সংগ্রহ করে হরিয়ানা ও পাঞ্জাব থেকে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে ২০ লক্ষ টন চাল সংগ্রহ করার জন্য অনুরোধ জানালেও, শেষ পর্যন্ত মাত্র ৪০,০০০ টন চাল নেওয়া হয়।’ কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের হারকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে, উপযুক্ত বাজার চিহ্নিতকরণের উপর জোর দিয়েছেন তিনি। আর সেই কারণেই রাজ্যের কৃষকরা যাতে ন্যায্য দাম পায়, তা নিশ্চিত করতে রাজ্য ৫২ লক্ষ টাকার ধান কেনার প্রস্তুতি নিয়েছে।
স্মল ফার্মারস এগ্রি বিজনেস কনসর্টিয়ামের ওই অনুষ্ঠানে এসএফএসি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুমন্ত চৌধুরী জানান, কৃষি ও কৃষি সংক্রান্ত উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সহায়তা প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাঙ্কগুলো। তিনি ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন তাঁরা পাঁচ কোটি টাকার কোনও প্রকল্পে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ হিসেবে দিয়েই থাকেন। প্রথম পাঁচ বছর এক্ষেত্রে কোনও সুদও দিতে হয়না। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ঋণ দেয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বেশিরভাগ সময়েই ব্যাঙ্কগুলি সেইসমস্ত আবেদন তাদের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠায়না। রাজ্য সরকার এখন এই ব্যাপারে ব্যাঙ্কগুলোকে নজর দিতে বলেছে। তবে এই ব্যাপারে আরও বেশি সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।