ইঙ্গিত সুবিধের নয় মোটেও। কেবল নীতীশ কুমার, সুশীল মোদীদের নয়, বিহারের এগজিট পোল দেখার পর কপালে চিন্তার ভাঁজ বঙ্গ-বিজেপি নেতাদেরও। এগজিট পোল বলছে, বিহারে ক্ষমতার দৌড়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে বিরোধী মহাজোট। কাল, মঙ্গলবার বিহার বিধানসভা ভোটের ফল। পড়শি রাজ্যে এগজিট পোলের পূর্বাভাস মিলে গেলে তার প্রভাব যে বাংলার আসন্ন বিধানসভা ভোটেও পড়বে, সে কথা বিলক্ষণ জানেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়রা। বিহারের ভোটে নীতীশের গদি উল্টে যাবে, এমনটা ধরে নিয়ে এ বার বাংলার নির্বাচনী রণকৌশল নির্ধারণের প্রস্তুতি চলছে বিজেপিতে।
তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়ের কথায়, ‘বাংলায় বিজেপি নেতারা খুব লাফালাফি করছেন। বিহার ভোটের ফল ঘোষণার পরেই সে সব শেষ হয়ে যাবে।’ এমনিতে গেরুয়া শিবিরের নেতাদের পরিকল্পনা, কালীপুজোর পরেই তাঁরা হইহই করে বিধানসভা ভোটের হাওয়া পুরোদস্তুর তুলে দেবেন। কিন্তু বিহারে এনডিএ ক্ষমতায় ফিরতে না-পারলে বাংলাতেও দলের নিচুতলার কর্মীদের মনোবল অনেকটাই ধাক্কা খাবে বলে রাজ্য বিজেপি নেতাদের একাংশের অভিমত। তাঁদের আশঙ্কা, এগজিট পোলের পূর্বাভাস মিলে গেলে নেতিবাচক প্রভাব বেশি পড়তে পারে উত্তরবঙ্গের দলীয় সংগঠনে। কারণ, আরজেডি-সহ বিরোধী শিবির ভালো জায়গায় রয়েছে উত্তর বিহারে। সেটা উত্তরবঙ্গ লাগোয়া অঞ্চল।
নির্বাচনী পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ ও ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে মোদী-ঝড়ে বিরোধী শিবির উড়ে গেলেও কোনও বিধানসভা ভোটেই বিজেপি সেই ঝড় তুলতে পারেনি। ব্যতিক্রম উত্তরপ্রদেশ। এমনকি মোদী, অমিত শাহের নিজের রাজ্য গুজরাতেও ক্ষমতায় ফিরতে বিজেপিকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে। বিহার ভোটে হারলে প্রমাণ হয়ে যাবে, ২০১৯-এর ভোটে যা-ই হোক, বিধানসভা ভোটে মোদী-ম্যাজিক বা মোদী-ঝড় কাজ করে না।
রাজনীতিকদের একাংশের অনুমান, বিহারে হেরে গেলে বিজেপি আরও মরিয়া হয়ে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির মতো চরম পদক্ষেপ করতে পারে। বারবার আইন-শৃঙ্খলার অবনতির কথা বলে, দিল্লি গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্যপাল তারই প্রেক্ষাপট তৈরি করে রাখছেন। বঙ্গের নেতারা হুমকি দিচ্ছেন। কারণ, বিহার হাতছাড়া হলে বাংলা, উড়িষ্যা, ঝাড়খণ্ড মিলিয়ে প্রায় পূর্ব ভারতই বিজেপির হাতছাড়া হবে। তাই বিহারের ভোটে হারলে বাংলার ভোটের আগে বিজেপির মনোবল ধাক্কা খাবে!