গত এক মাস ধরে তিনি মারণ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই চালাচ্ছিলেন। আগের তুলনায় অনেকটা সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন। বার কয়েক পজিটিভ আসার পর, তিন দিন আগেই রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। কিন্তু, তীরে এসে তরি ডোবার মতো শেষরক্ষা আর হল না! গতকাল শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল রাজ্যের আইন বিষয়ক দফতরের সচিব সন্দীপকুমার রায়চৌধুরীর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৬ বছর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এদিন আইন সচিবের মৃত্যুর খবর জানানো হয়।
সূত্রের খবর, ৩ অক্টোবর সপরিবার শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন সন্দীপকুমার রায়চৌধুরী। কারণ, সন্দীপবাবুর সঙ্গে তাঁর স্ত্রী-কন্যারও কোভিড টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাঁর স্ত্রী-কন্যার ছুটি হয়ে গেলেও রাজ্যের আইন সচিব হাসপাতালেই কোভিডের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। হাসপাতালের বরিষ্ঠ এক চিকিত্সক জানান, টানা ২৪ দিন সন্দীপবাবু আইসিইউতে ছিলেন। ওই সময়ের মধ্যেই তিন বার তাঁর কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
চতুর্থ বারের পরীক্ষায় গত মঙ্গলবার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর তাঁকে নন-কোভিড আইসিইউতে শিফট করা হয়েছিল। শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ার কারণেই তাঁকে আইসিইউতে রাখতে হয়। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রাও ওঠানামা করছিল। ডাক্তাররা জানান, শুক্রবার রাত থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। শনিবার সকালে তার মধ্যেই ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়। এর পর, সমস্তটাই চিকিত্সকদের হাতের বাইরে চলে যায়। মৃত্যু হয় রাজ্যের আইন সচিবের। মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই সন্দীপবাবুর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে, দৈনিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা চার হাজারে আশপাশে ঘোরাফেরা করলেও রাজ্যে ফের বাড়তে শুরু করেছে সুস্থতার হার। সেইসঙ্গে অ্যাক্টিভ আক্রান্তের সংখ্যাও নিয়মিত ভাবে কমতে শুরু করেছে রাজ্যে। অতিমারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলা যে ফের ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের রিপোর্ট বিশ্লেষণে তার খানিক আভাস মেলে। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবারই রাজ্যে দৈনিক সুস্থতা চার হাজারের গণ্ডি অতিক্রম করে নজির সৃষ্টি করে। একদিনে এমন বিপুল সংখ্যক আক্রান্তের সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনা বাংলায় আগে ঘটেনি। শনিবারও সেই ধারা অব্যাহত থেকেছে।