বিগত কিছু দিন ধরেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে টানা আক্রমণ শানাচ্ছেন ওমর আবদুল্লা। এবার কেন্দ্রের অস্বস্তি বাড়িয়ে তিনি এই প্রশ্ন তুললেন যে, নিজের রাজ্যের জমির মালিকানা রক্ষার ক্ষমতা বহু রাজ্যেরই রয়েছে, তাহলে তা জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষেত্রে থাকলে কী অসুবিধা? ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা এই প্রসঙ্গে বিশেষ করে উল্লেখ করেন দেশের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির কথা। তাদের বিশেষ আইন রয়েছে, যাতে দেশের অন্য রাজ্যের মানুষ সেখানে গিয়ে জমি কিনতে না পারে, তবে তা জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষেত্রে বলবৎ থাকবে না কেন।
বৃহস্পতিবার শ্রীনগরে একটি অনুষ্ঠানে ওমর বলেন, ‘হিমাচলপ্রদেশ, সিকিম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড—এমন অনেক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকা আছে, যেখানে যে কোনও কেউ বাইরে থেকে গিয়ে জমি কিনতে পারে না আজও। কিন্তু ওই অধিকার আমরা চাইলেই তা হয়ে ওঠে ‘দেশবিরোধী’। কেন? অন্য রাজ্যের অধিকার নিয়ে কখনও প্রশ্ন ওঠে না, যত প্রশ্নের মুখে শুধু আমরাই। ‘দিল্লীওয়ালা’রা (পড়ুন কেন্দ্র) কী চান? আমরা সক্রিয় রাজনীতি ছেড়ে দিই? আমরা আমাদের জমি ও সংস্কৃতির জন্য লড়ছি, আত্মপরিচয়ের জন্য লড়ছি।’
ওমরের দাবি, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সাংবিধানিক অধিকারের স্বীকৃতি চাওয়া কোনও অন্যায় নয়। কিন্তু এখানে কোনও জমায়েত, মিছিল করতে দেওয়া হয় না। কোনও দাবিই করা যায় না। ‘আমরা কি সাংবিধানিক পদ্ধতিতে নিজেদের অধিকার দাবি করে কোনও ভুল করছি?’ —প্রশ্ন তোলেন ওমর। তিনি জানান, গত বছর লোকসভা নির্বাচনের পরে তাঁরা ভেবেছিলেন, জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট হবে। কিন্তু তা তো হয়ইনি, বরং ক্ষমতার বলে তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে লজ্জাহীন ভাবে চেপে রাখা হচ্ছে।
কাশ্মীর রক্ষায় আরও অনেক আগে এনসি-পিডিপি জোট হওয়া দরকার ছিল বলেও মন্তব্য করেন ওমর আবদুল্লা। তিনি দাবি করেন, কাশ্মীরে যা হচ্ছে তা গদির জন্য লড়াই নয়। বরং এটি অধিকারে বাঁচানোর লড়াই। ওমরের মতে, ‘এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে আমরা যদি গদির পিছনে দৌড়াই তাহলে মানুষ ক্ষমা করবেন না। যদি এই সর্বদলের একজোট হওয়াটা আগে হত, তাহলে ভাল হত।’ তিনি এ-ও বলেন যে, ‘কেন্দ্র আমাদের দুর্বল করতে, আমাদের মধ্যে ভাঙন ধরাতে সবরকম কূটকৌশল অবলম্বন করছে।’