একটা মন্তব্য। তাতেই ভাঙন দলে।
রাফাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করেছিলেন শারদ পাওয়ার। তার জেরেই এনসিপি-র অন্যতম নেতা তারিক আনোয়ার বেরিয়ে এলেন দল ছেড়ে। বললেন, ‘ শারদ পাওয়ারের মন্তব্যে দুঃখ পেয়েছি’। নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বিহারের কাটিহার থেকে তারিক দলত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। তাঁর মতে এমন মন্তব্য ‘দূর্ভাগ্যজনক’। তিনি ওই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নন। দলত্যাগ করলেও ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা এখনও করেন নি বলেই জানিয়েছেন তারিক। তবে শোনা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন তিনি। তারিক দলত্যাগ করায় বিহারে এনসিপি-র অস্তিত্ব কার্যত লোপ পেল।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে বিদেশিনী ইস্যুতে সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে শারদ পাওয়ার পূর্ণ সাংমা, তারিক আনোয়ারেরা মিলে এনসিপি গঠন করেছিলেন। পূর্ণ সাংমা প্রয়াত। তাঁর ছেলে-মেয়ে বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। তারিক আনোয়ারও এবার বেরিয়ে গেলেন। এনসিপি প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একা রয়ে গেলেন শুধু শারদ পাওয়ার।
তারিকের কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জল্পনায় কর্মীরা উচ্ছ্বসিত। কংগ্রেস নেতা প্রেমচাঁদ মিশ্র বলেন, ‘তারিক অত্যন্ত ভাল রাজনীতিক। আমরা ওঁর পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছি।’ বিহারের কংগ্রেস সাংসদ রঞ্জিত রঞ্জনের কথায়, ‘তারিককে কংগ্রেসে স্বাগত জানানো হচ্ছে।’ বিহার প্রদেশ কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অশোক রাম বলেছেন, ‘তারিক আনোয়ার বিহারের প্রতিষ্ঠিত ও সম্মাননীয় নেতা। তাঁকে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।’ অন্যদিকে তারিকের দলত্যাগের ঘটনাকে হাওয়া বুঝে দলবদল বলছে নীতীশকুমারের দল। নীতিশের কথায়, ‘লোকসভার ভোটের দিকে তাকিয়ে সুযোগসন্ধানী পদক্ষেপ করেছেন তারিক’।
অবশ্য এনসিপি নেত্রী তথা পাওয়ার-কন্যা সুপ্রিয়া সুলে এদিন কংগ্রেসের সুরে সুর মিলিয়ে রাফাল-কাণ্ডে ‘যৌথ সংসদীয় কমিটি’ গঠনের দাবি তুলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হল মানুষ শারদ পাওয়ারের সম্পূর্ণ বক্তব্য শোনেননি। তিনি রাফাল নিয়ে ৩টি প্রশ্ন করেছেন। এক, রাফাল বিমানের দাম ৫২৬ কোটি থেকে ৩০০ শতাংশ বাড়িয়ে ১৬৭০ কোটিতে কেনার যুক্তি কী? দুই, যদি কিছু সন্দেহের উদ্রেক হয়, সরকার যদি আত্মবিশ্বাসী হয়, তাহলে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করতে গড়িমসি করা হচ্ছে কেন? এবং তিন, বোফর্সে বিজেপি দাম ও প্রযুক্তিগত বিবরণের দাবি জানিয়েছিল। তাহলে এখন কেন এই দুই বিষয় গোপন করা হচ্ছে?’