সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এবার মিঠুন চক্রবর্তী-সহ একাধিক সেলিব্রিটি, নামিদামি ব্যক্তির রিসর্ট ভাঙা পড়তে চলেছে তামিলনাড়ুর নীলগিরির পাহাড়ি অঞ্চলে। সূত্রের খবর, ওই রিসর্টগুলির কারণে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে হাতিদের চলাফেরায়। এলিফেন্ট করিডরের খুব কাছে রিসর্টগুলির অবস্থান। যার ফলে আজ রিসর্টগুলি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ ২০১১ সালে এই একই ইস্যুতে মাদ্রাজ হাইকোর্টও রিসর্ট ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশেই এদিন সিলমোহর দিল শীর্ষ আদালতও৷
নীলগিরির পাহাড়ি অঞ্চলে মাদুমলাই ফরেস্টের সুরক্ষিত জায়গাই আইনি বিধি মেনেই রিসর্ট তৈরি করেছিলেন একাধিক জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। এর মধ্যে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীরও একটি রিসর্ট রয়েছে৷ কিন্তু ওই এলাকার আশপাশ দিয়েই যাতায়াত হাতিদের৷ এলিফ্যান্ট করিডরের এতটা কাছে জনবসতির কারণে প্রভাব পড়ে ওই অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রে৷ রিসর্ট তৈরি হওয়ার পর ওই অঞ্চলে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে জনসমাগম৷ মানুষের ভয়ে হাতিরাও নিজেদের চলাচলের রাস্তা ক্রমাগত বদলে ফেলছে। যার ফলে ক্ষতি হচ্ছে জঙ্গলের৷
এই বিষয়টিতে নজরে আনতেই ২০১১ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা৷ সেই মামলার শুনানিতেই পরিবেশ রক্ষার উদ্দেশ্যে মিঠুন চক্রবর্তীর রিসর্ট সহ ওই এলাকায় গড়ে ওঠা সমস্ত হোটেলগুলিকেই ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় আদালত৷ মাদ্রাজ হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে জমা পড়ে ৩২টি আপিল৷ সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তী নিজের আবেদনে আদালতকে জানিয়েছিলেন, তাঁর রিসর্ট থেকে ওই এলাকার বহু আদিবাসী মানুষ নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করেন৷ রিসর্ট ভাঙা পড়লে তাঁরাও রোজগার হারাবেন৷
একইসঙ্গে ওখানে মানুষের জনসমাগমের কারণে চোরাশিকারদের হাত থেকেও হাতিদের বাঁচানো সম্ভব হয়েছে৷ তাই আদালতে রিসর্টটি না ভাঙার আবেদন রেখেছিলেন অভিনেতা। তবে ওই আবেদনের শুনানিতে সু্প্রিম কোর্ট মিঠুন চক্রবর্তীর আবেদন সহ ৩২টি আপিল খারিজ করে মাদ্রাজ হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখে৷ আদালত বলে, হাতিরা অত্যন্ত ভদ্র একটি প্রাণী। তাই মানুষেরও ভদ্রতাস্বরূপ তাদের রাস্তা ছেড়ে দেওয়া উচিত৷ ওই অঞ্চলকে ২০১০ সালের আগস্ট মাসে এলিফ্যান্ট করিডর বা হাতিদের চলাফেরার অঞ্চল বলে চিহ্নিত করে তামিলনাড়ু সরকার৷ তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে ও হাতিদের বাঁচাতে ওই অঞ্চলে সমস্ত রিসর্ট ভেঙে ফেলা হচ্ছে।