সিবিআই হাথরস কাণ্ডের তদন্তভার হাতে নিতে না নিতেই ফের শুরু হয়ে গেল বিতর্ক। রবিবার সকালে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, গণধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগে দায়ের করা এফআইআরের কপি-সহ প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিবিআই। কিন্তু, বেলা বাড়তেই তা সরিয়ে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় এফআইআর থেকে মুছে দেওয়া হয় গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগগুলি। অভিযুক্ত করা হয়েছে শুধু সন্দীপকে।
গতকাল সকালে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি প্রথম এফআইআর–সহ যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল, তাতে দেখা যায় ৯৮৯–এর এসসি–এসটি আইনের পাশাপাশি হাথরসের ১৯ বছরের দলিত মেয়েটিকে খুনের চেষ্টা (৩০৭), গণধর্ষণ (৩৬৭ ডি) এবং খুনের (৩০২) অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এমনকী, সিবিআইয়ের গাজিয়াবাদ শাখার দুর্নীতি বিরোধী শাখা তাতে জানিয়েছিল, ‘এই মামলায় সম্ভাব্য অপরাধগুলি হল— ধর্ষণ, হত্যার চেষ্টা, গণধর্ষণ এবং হত্যা।’
কিন্তু পরে সিবিআইয়ের ওয়েবসাইট থেকে এই এফআইআর এবং প্রেস বিজ্ঞপ্তি তুলে নেওয়া হয়েছে। পরে দুপুরে আরও একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিবিআই। তাতে বলা হয়েছে, ‘সিবিআই তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে। এক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এর আগে মৃতের ভাইয়ের এক অভিযোগের ভিত্তিতে হাথরসের চান্দপা থানায় (সিসি নং ১৩৬/২০২০) একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত তাঁর বোনকে শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করছিল।’
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে যোগী সরকারকে খোঁচা দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘লজ্জাজনক সত্যিটা হল, এখনও অনেক ভারতীয় দলিত, মুসলিম ও আদিবাসীদের মানুষ বলেই মনে করেন না। মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর পুলিশ বলছে কেউ ধর্ষণ হননি। কারণ, তাঁদের মতো অনেক ভারতীয়ের কাছে মেয়েটি কেউই না।’
উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর স্থানীয় থানায় হত্যার চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিল্লীর সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে নির্যাতিতার। তারপর রাতারাতি মৃতের পরিবারের লোকদের আটক করে রেখে একপ্রকার জোর করেই মৃতদেহের সৎকার করে দেয় পুলিশ। তারপরেই জাতীয় স্তরে শোরগোল শুরু হয় হাথরসের মেয়েটির সুবিচারের দাবিতে।
এদিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং ভীম আর্মি–র প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ–সহ ৪০০ জনের বিরুদ্ধে আইন ভাঙার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। সেইসঙ্গে হাথরসের ঘটনায় কেরালার এক সাংবাদিক–সহ ৪ জনকে পিএফআইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেইসব মামলাও খতিয়ে দেখবে সিবিআই।