ধর্ষণ আটকাতে আজ সকালেই মেয়েদের ভারতীয় সংস্কৃতি শেখানো এবং উচিত শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছিলেন বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিংহ। আর তারপরই আজ দুপুরে হাথরাসে গণধর্ষণে অভিযুক্তদের সমর্থনে বড়সড় সভার আয়োজন করলেন স্থানীয় বিজেপি নেতা রাজবীর সিং পেহেলওয়ান। যিনি কিনা একটা সময় বিজেপির টিকিটে বিধায়কও হয়েছেন। তাঁর বাড়িতেই অভিযুক্তদের ‘সুবিচারে’র দাবিতে এই সভাটির আয়োজন করা হয়েছিল। এর আগে কাঠুয়া এবং উন্নাও কাণ্ডের সময়েও এভাবেই অভিযুক্তদের সমর্থনে সভা এবং মিছিল করতে দেখা গিয়েছিল বিজেপি নেতা-কর্মীদের।
উল্লেখ্য, হাথরাসের ঘটনায় উচ্চবর্ণের চার অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এরা সকলেই তথাকথিত ‘উচ্চবর্ণে’র নাগরিক। রাজবীর সিং পেহেলওয়ান নামের স্থানীয় ওই বিজেপি নেতার দাবি, উচ্চবর্ণের এই চার যুবককে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ওই বিজেপি নেতা বলছেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি এই সভার আয়োজন করেছেন। যেখানে হাজির ছিল সমাজের তথাকথিত উচ্চবর্ণের বহু মানুষ।
এদিন ক্যামেরার সামনেই আয়োজকরা দাবি করেছেন, তাঁরা পুলিশকে জানিয়েই এই বৈঠক করেছেন। উচ্চবর্ণের চার অভিযুক্তকে ফাঁসানো হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজন। মজার কথা হল, হাথরাসের স্থানীয় প্রশাসন শনিবার পর্যন্ত করোনার অজুহাতে ওই গ্রামে সংবাদমাধ্যমকে পর্যন্ত ঢুকতে দিচ্ছিল না। তাহলে আজ এত বড় সভার অনুমতি দেওয়া হল কোন ভিত্তিতে? তাও আবার সেই অভিযুক্তদেরই সমর্থনে?
তবে সেই এলাকার জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট প্রেমপ্রকাশ মীনা অবশ্য দাবি করেছেন, এই বৈঠক সম্পর্কে কিছুই জানেন না তিনি। উল্লেখ্য, হাথরাসের ধর্ষকদের সমর্থনে মিছিল বা সভা এই প্রথম নয়। এর আগে গত শুক্রবার সবর্ণ-সমাজের বহু মানুষ ওই এলাকায় অভিযুক্তদের সমর্থনে জমায়েত করার চেষ্টা করেছিলেন। তাছাড়া যে বিজেপি নেতা আজ সভার আয়োজন করেছেন, তিনিই আগে বয়ান দিয়েছিলেন, যে ওই নির্যাতিতাকে নাকি তাঁর মা এবং ভাই-ই খুন করেছে। প্রসঙ্গত, এদিনের ওই বৈঠকে গ্রেফতার হওয়া সেই ৪ জন অভিযুক্তের পরিবারও হাজির ছিল।