করোনা ধাক্কায় কুপোকাত ভারতীয় অর্থনীতি। যার জেরে গত কয়েকমাসে একটানা বেড়েই চলেছে বেকারত্বের হার। সদ্য প্রকাশিত সেন্টার ফর মনিটারিং ইণ্ডিয়ান ইকোনমিক বা সিএমআইই-র রিপোর্ট বলছে বর্তমানে বেকারত্বের জাতীয় গড় দাঁড়িয়েছে ৮.৩৫ শতাংশে। যা নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগে বিশেষজ্ঞরা।
ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা কোভিডের দ্রুত বিস্তার ও মাহামারী মোকাবিলায় সরকারের অতিরিক্ত খরচের কারণে ভারত প্রায় ৩০ লক্ষ কোটির স্থায়ী ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। বর্তমানে এই বিষয়ে আরো উদ্বেগের কথা শোনাচ্ছে ইন্ডিয়া রেটিং এবং রিসার্চ, গোল্ডম্যান স্যাচ, আইসিআরএ বা ক্রিসিল। প্রতিটি আর্থিক বিশ্লেষক সংস্থাই এই ক্ষেত্রে করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রের কার্যকরী পদক্ষেপের অভাব ও দেশের একটা বড় অংশে সংক্রমণ বৃদ্ধিকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বলে জানা যাচ্ছে।
অর্থনাতির বর্তমান হাল হকিকত বিচার করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন দেশীয় অর্থনীতি এই জিডিপি ঘাটতি আরও কখনওই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়। এটাই সহজ ভাষায় স্থায়ী ক্ষতি হিসাবে অভিহিত করা হচ্ছে। মূলত বনধ বা ছুটির কারণে যে বিশালাকার অর্থিক ক্ষতির সম্মূখীন হয় গোটা দেশ, এই ক্ষেত্রে তার সাথেও করোনাকালীন লকডাউনের কথাও ভাবতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাহলেই ক্ষতির বহর বুঝতে অনেকটাই সুবিধা হবে।
এদিকে একটানা লকডউনে কার্যত ভেঙে পড়ছে দেশের অংসগঠিত ক্ষেত্র। দীর্ঘদিন বন্ধ থেকে উত্পাদন শিল্প। বন্ধ থেকেছে প্রায় সমস্ত ছোট-বড় কলকারখানা। ছাপ পড়েছে কৃষিব্যবস্থার উপরেও। যার জেরে শহরাঞ্চলের পাপাপাশি নিদারুণ আর্থিক সঙ্কট তৈরি হয় গ্রামীণ অর্থনীতিতেও। কিন্তু এই অবস্থাতেও বিকল্প কাজের সন্ধান দিতে কার্যত ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্য সরকার গুলিও। গ্রামাঞ্চলে চাপ পড়েছে ১০০ দিনের কাজের উপর। কাজের যোগানের থেকে চাহিদার পরিমাণও উত্তোরত্তোর বেড়েই চলেছে। ওয়াকিবহাল মহলের এই কারণেই বর্তমানে বেকরত্বের সমস্যা সবথেকে বেশি মাথা ব্যথার কারণ হচ্ছে সরকারের।