গত মে মাস থেকেই তুঙ্গে উঠেছে পূর্ব লাদাখে সীমান্ত সমস্যা। দফায় দফায় দুই দেশের বাহিনী মুখোমুখি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে পাঁচ ভারতীয়কে চীনা সেনা অপহরণ করায় উত্তেজনা আরও বাড়ে। অরুণাচল সীমান্তে নিখোঁজ হওয়া ওই পাঁচ যুবককে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য লাগাতার পিপলস লিবারেশন আর্মিকে (পিএলএ) চাপ দিয়ে আসছে ভারতীয় সেনা। জেরে আজ, শনিবার সাত সকালেই পাঁচজনকে সীমান্ত পার করিয়ে ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে পিএলএ, ভারতীয় সেনা সূত্রে এমন খবরই পাওয়া গেছে। চীনের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা দিয়েই তাঁদের ভারতে পাঠানো হয়। সেনা সূত্র জানাচ্ছে, কিবিথু বর্ডার এলাকা দিয়ে ভারতের সীমায় ঢুকতে তাঁদের প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার ভোরে রাজ্যে আপার সুবনসিরির নাচো সেক্টর থেকে পাঁচ যুবকের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর মেলে। অরুণাচল প্রদেশের কংগ্রেস বিধায়ক নিনং এরিং টুইট করে জানান, টাগিন জনজাতির পাঁচ যুবককে অপহরণ করেছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। পরে অরুণাচল পুলিশের ডিজিও জানান, নাচো সেক্টরের সেরা-৭ এলাকার একটি জঙ্গলের ভেতর থেকে পাঁচ অরুণাচলি যুবককে তুলে নিয়ে গেছে চীনের সেনা। ওই এলাকা ভারত-চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ১০০ কিলোমিটার দূরে। পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চীন ও ভারতীয় বাহিনীর সংঘাতের আবহেই এই ঘটনা নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়।
পুলিশ জানায়, নিখোঁজ হওয়া যুবকরা জঙ্গলে গুম্বা নামে একপ্রকার গুল্ম সংগ্রহ করতে গিয়েছিল। এই গুল্ম জাতীয় ভেষজ উদ্ভিদ আন্তর্জাতিক বাজারে চড়া দামে বিক্রি হয়। তাছাড়া হরিণ শিকারের উদ্দেশ্যও ছিল তাদের। জঙ্গলে সীমান্ত নির্দিষ্ট না-থাকায় হয়তো তাঁরা চীনা বাহিনীর মুখোমুখি পড়ে গিয়েছিল। দলে তাঁরা সাতজন ছিল, যাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে তুলে নিয়ে যায় চীনের সেনা। যুবকদের নাম টোচ সিংকাম, প্রসাদ রিংলিং, ডোংটু এবিয়া, টানু বাকের ও গারু দিরি। অপহৃতদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তার খবরাখবর নেওয়ার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্য চায় অরুণাচলের পুলিশ। এরপরেই পিএলএ বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে ভারতের সেনা। যদিও এই অপহরণের অভিযোগ মানতে চায়নি পিপলস লিবারেশন আর্মি।