লগ্নি আনতে বিদেশে গেলেও মন পড়ে আছে বাংলাতেই। বারবার ফোন করে খবর নিচ্ছেন বাগরি মার্কেটের আগুন নিভল কি-না! আগুন নিয়ন্ত্রণে খবর আসতে একটু স্বস্তি ফুটল মমতার মুখে। জার্মানির ফ্র্যাঙ্কফুর্ট থেকেই বাগরি মার্কেটের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, ‘পুলিশ, দমকল ও কলকাতা পুরসভা তদন্ত করবে’।
মমতা বলেন, ‘বাণিজ্য সম্মেলনে এলেও মন কলকাতায় পড়ে আছে। তবে এখানে অর্থমন্ত্রী। মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিব রয়েছেন। তাই এখানেও কাজ করছি’।ফ্র্যাঙ্কফুর্ট থেকেই মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ফোনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা বাগরি মার্কেট নতুন করে করতে চাইলে নকশা দিক। আমরা পাশ করে দেব। আর না পারলে আমরাই করে দেব। এভাবে যখন-তখন আগুন লেগে যাবে, এটা চলতে পারে না’। পাশাপাশি বহুতল ভবনগুলিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যাতে সঠিকভাবে রূপায়িত হয়, তাঁর জন্য অগ্নি বিধি সংক্রান্ত আইন সংশোধনের কথা ভাবছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি মেয়রকে ফোন করে বলেছি, বহুতলে অগ্নি নির্বাপন নিয়ম অনেকেই ঠিকমতো মানছেন না। এই অগ্নি সুরক্ষা বিধি যাতে প্রত্যেকে গুরুত্ব সহকারে মানেন, তার জন্য আইনকে আরও কঠোর হতে হবে। সেজন্যই অগ্নি বিধি আইনকে সংশোধন করতে বলেছি’।
রাজ্যের সব সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও বিশেশজ্ঞ কমিটি গড়ছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফ্র্যাঙ্কফুর্টে বসেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সেতু মেরামতি, সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি থাকবে। তারা পরামর্শ দেবে। ৫০ মিটারের বেশী কোনও সেতু থাকলে সেগুলি রাজ্যের পূর্ত দপ্তর তৈরি করবে। স্থানীয় জেলা পরিষদ বা পুরসভাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে না। কারণ ওদের পরিকাঠামো নেই’। মাঝেরহাট সেতু প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রেলের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রেখে চলা হচ্ছে। আমরা চাইছি আরেকটি লেভেল ক্রসিং হোক। রেল বানাক। খরচ রাজ্য সরকার দিয়ে দেবে’। তাঁর কথায়, ‘এক দেড় বছর একটু ভোগান্তি হবে। কিন্তু কলকাতার মুকুটে নতুন সংযোজন হবে এইসব প্রকল্প। মাঝেরহাট সেতু অন্তত ১০০ মিটার ভেঙে পড়েছে। ভাঙাভাঙিতেই ৩ মাস সময় লাগবে। থাম তৈরি করতে আরও ৩ মাস’। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এইসব সেতুর বহনক্ষমতা ২০ থেকে ৩০ টনের বেশী ছিল না। এখন গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে। ১০০ থেকে ২০০ টন মাল নিয়ে চলছে।এই জন্যই ২০ চাকার মালবাহী গাড়ি বন্ধ করা হয়েছে। মমতা আরও বলেন, ‘সামনে পুজো। গঙ্গাসাগর মেলা। একটু অসুবিধা হবে। আমি চাইছি একদিনও সময় নষ্ট না করে রেল এবং আমাদের দপ্তর কাজ করুক। উন্নয়নে কেন্দ্র-রাজ্য ভেদাভেদ নেই’।