আবারও বিতর্কে জড়ালেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। চলতি বছর এমপি ল্যাডের অর্ধেক টাকাই তিনি ভারতীয় রেল-এর হাতে তুলে দিয়েছেন। এমপি ল্যাড হল সাংসদের এলাকা উন্নয়নকার্যের জন্য বরাদ্দ তহবিল। বিজেপির এই রাজ্যসভার সদস্য সম্প্রতি নিজের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে আড়াই কোটি টাকা রেলকে দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।
সূত্র থেকে পাওয়া খবর, দলের অন্দরেও ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে ‘দ্রৌপদী’-কে। এর আগেও বহুবারই রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে নানা বিষয়ে মতবিরোধ হয়েছে তাঁর। ফলে ইদানীং এ রাজ্যে, দলের কোনও অনুষ্ঠানেই বিশেষ দেখা যায় না তাঁকে। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের দাবি, এটা তো কার্যত দিল্লির টাকা দিল্লিকেই ফিরিয়ে দেওয়ার সমান। রাজ্যে বিবিধ সমস্যা রয়েছে। এমপি ল্যাডের ওই টাকা সেইসব খাতে দেওয়া উচিত ছিল। রেলের জন্য তো ভারত সরকার আলাদা বাজেট বরাদ্দ রাখে। ওই সংস্থায় কেন এই বাড়তি টাকা দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন দলের এক নেতা। উল্লেখ্য, রাজ্যসভার সদস্যরা প্রতি বছর এলাকা উন্নয়ন খাতে পাঁচ কোটি টাকা করে পান। চলতি বছর সেই খাতেরই অর্ধেকটাই রেলকে দিয়েছেন রূপা।
রূপার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে আমি দেশের যে কোনও রাজ্য কিংবা সরকারি সংস্থাকে এলাকা উন্নয়নের জন্য টাকা দিতে পারি। পশ্চিম মেদিনীপুরের কাঁসাই হল্টে দু’টি স্টেশন তৈরি করার জন্য তিনি ভারতীয় রেলকে আড়াই কোটি টাকা দিয়েছেন বলেও সাফ জানান। রূপার অভিযোগ, গত ৩০ বছর ধরে ওই এলাকায় স্টেশন তৈরির দাবি উঠেছে। শুধু তাই নয়, নিজের দলীয় নেতৃত্বকেও এক হাত নিতে ছাড়েনি তিনি। তাঁর কথায়, সাধারণ মানুষের প্রকৃত সমস্যা থাকলে তা সমাধানে এমপি ল্যাডের টাকা খরচ করি। এ নিয়ে দলের মধ্যে কোনও চর্চা হলে, তা নিয়ে আমার কিছু করার নেই।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার নানাভাবে রাজ্যের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ চালাচ্ছে। এই ঘটনা তার নয়া সংযোজন। কারণ, রূপাদেবী পশ্চিমবঙ্গের মানুষ হয়ে যেভাবে ভারতীয় রেলকে এমপি ল্যাডের টাকা তুলে দিয়েছেন, তাতে বিজেপির ভিন্ন রাজনীতি দেখছেন শিক্ষামন্ত্রী।