দলের বিদ্রোহী নেতাদের ছেঁটে ফেলার কাজ কি শুরু করে দিল কংগ্রেস? নাকি শুধু বার্তা দিতেই এত বড় পদক্ষেপ করলেন সোনিয়া? বৃহস্পতিবার রাতে কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রীর নেওয়া একটি সিদ্ধান্তের পর সেই প্রশ্নই উঠছে। সংসদের বাদল অধিবেশনে দলের অবস্থান নির্ধারণের জন্য বৃহস্পতিবার রাজ্যসভা এবং লোকসভা দুই কক্ষেই একটি করে কমিটি গড়ে দিয়েছেন সোনিয়া। যাতে সুকৌশলে বিদ্রোহী নেতাদের হয় বাদ দেওয়া হয়েছে, নাহয় গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যসভার নীতি নির্ধারণের জন্য যে কমিটি তৈরি হয়েছে, তাতে গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ তিনজন নেতা জায়গা পেয়েছেন। এঁরা হলেন সোনিয়ার ব্যক্তিগত সচিব তথা কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ আহমেদ প্যাটেল, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল, এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। গান্ধীদের ঘনিষ্ঠ রমেশকেই এই কমিটির নেতৃত্বে রাখা হয়েছে। নাম কা ওয়াস্তে কমিটিতে ঠাঁই হয়েছে রাজ্যসভার দলনেতা তথা দলের বিদ্রোহী শিবিরের অন্যতম কাণ্ডারি গুলাম নবি আজাদ এবং অপর বিদ্রোহী নেতা তথা রাজ্যসভার ডেপুটি লিডার আনন্দ শর্মার। বস্তুত গুলাম নবি এবং আনন্দ শর্মাদের উপর এবার ছড়ি ঘোরাবেন জয়রাম রমেশরা।
একইভাবে লোকসভার জন্যও একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। যাতে শুধু রাহুল ঘনিষ্ঠ নেতারাই ঠাঁই পেয়েছেন। এই কমিটিতে আছেন রাহুলের অত্যন্ত কাছের লোক গৌরব গগৈ, পাঞ্জাবের সাংসদ রণবীর সিং বিট্টো, তামিলনাড়ুর মণিক্কম ঠাকুর, অধীর চৌধুরি এবং কেরলের কে সুরেশ। খুব সুচারুভাবে লোকসভায় দলের দুই অন্যতম মুখ, তথা তুখড় বক্তা শশী থারুর এবং মণীশ তিওয়ারিকে এই তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। এর দুজনেই বিদ্রোহীদের চিঠিতে সই করেছিলেন। পদোন্নতি হয়েছে গৌরবের। হুইপ থেকে তিনি হয়েছেন রাজ্যসভার ডেপুটি লিডার। আর রণবীর সিং বিট্টোকে করা হয়েছে হুইপ। রাজনৈতিক মহলের মত, এবার বিদ্রোহীদের একেবারে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে দিয়েছেন সোনিয়া। দলে থাকতে হলে শৃঙ্খলা মানতে হবে। যদিও নিন্দুকেরা বলেন, কংগ্রেসে শৃঙ্খলা মানে গান্ধীদের আনুগত্য।