জেইই এবং নিট পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে আজ, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হচ্ছে। বাংলা-সহ সাতটি রাজ্য একযোগে মামলা করবে। বাংলা ছাড়া বাকি রাজ্যগুলি হলঃ পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিসগড়, রাজস্থান ও পুদুচেরি৷ ওই ছ’টি রাজ্যেও বিজেপি সরকার নেই এবং ওই রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা সোনিয়া গান্ধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বুধবারের ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার মূল নথি তৈরি করছেন অভিষেক মনু সিংভি, তাঁর সঙ্গে থাকবেন আরও কয়েক জন বিশিষ্ট আইনজীবী। বৃহস্পতিবার বাংলার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা পরীক্ষার বিরুদ্ধে নই। আমরা বলছি, করোনার বিপদের সময়ে পরীক্ষা না-নিয়ে তা পিছিয়ে দেওয়া হোক।’ বুধবারের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন বাকি মুখ্যমন্ত্রীদের। তাতে বাকিরা সহমত হন, সায় দেন কংগ্রেস সভানেত্রী। বস্তুত মমতার প্রস্তাব মেনে এগনোই শুধু নয়, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকেই এই ব্যাপারে নেতৃত্বের ভার দেন সোনিয়া। আজ আদালতে এসএফআই-সহ বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠনও রিভিউ পিটিশন দাখিল করতে পারে।
পরীক্ষা স্থগিত রাখার দাবি নয়া মাত্রা পেয়েছে উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের ভূমিকায়। করোনার সময়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার আয়োজনের বিরোধিতা করে উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে৷ উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ২৬ লক্ষ পরীক্ষার্থীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নিরাপত্তার কথা ভেবেই নির্ধারিত পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক নবীন৷
বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী পরীক্ষা স্থগিত রাখার পক্ষেই মত দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, যানবাহনের সমস্যাই প্রধান বাধা। বুধবারের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরীক্ষা পিছনোর পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে তাদের কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, আদালত পরীক্ষায় সবুজ সংকেত দিলেও সরকার রায় পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানাতেই পারে, অতীতে এর একাধিক দৃষ্টান্ত আছে।
সূত্রের খবর, পরীক্ষা স্থগিত রাখার যুক্তি হিসেবে আজ সুপ্রিম কোর্টে সব চেয়ে জোরালো ভাবে যানবাহনের সমস্যা এবং স্বল্প সংখ্যক পরীক্ষাকেন্দ্র থাকার বিষয় তুলে ধরা হবে। আদালতকে জানানো হবে, করোনা-সংক্রমণের আশঙ্কায় যখন আদালতে ভার্চুয়াল শুনানি করতে হচ্ছে, তখন কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী কী ভাবে করোনার বিপদকে উপেক্ষা করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছবেন?বিজেপি সরকার যেখানে নেই, সেই সব রাজ্যের আইনজ্ঞদের অনেকের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট আগেই নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে এবং পরীক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা উল্লেখ করে করোনাকালে পরীক্ষার আয়োজনের পক্ষেই মত দিয়েছে। তাই, রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানোই একমাত্র উপায় হতে পারে ওই আইনজ্ঞরা মনে করছেন।