করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই কয়েকশো লোক হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। যাঁদের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে, তাঁদের অনেকেরই প্লাজমার দরকার পড়ছে। কিন্তু চাইলেই তো আর তা পাওয়া যায় না, তাই অনেককেই এই প্লাজমা জোগাড় করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তার জেরে অনেকেই এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করছেন প্লাজমা চেয়ে। সম্প্রতি সেই রকমই বেশ কিছু পোস্ট দেখে গতকাল প্লাজমা দিতে এগিয়ে আসেন কলকাতা পুলিশের ৫জন করোনাজয়ী কর্মী।
সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সব মিলিয়ে ৯জন কর্মী ও ১জন আধিকারিককে সংবর্ধনা দিয়েছেন স্বয়ং কলকাতা পুলিশের কমিশনার অনুজ শর্মা। তবে এরপর থেকে যাতে করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যার সৃষ্টি না হয়, তার জন্যই নতুন নির্দেশ দিলেন তিনি। তাঁরই নির্দেশে লালবাজারে এখন আলাদা করে তালিকা তৈরি হচ্ছে বাহিনীর সেই সব করোনাজয়ী পুলিশকর্মীদের নাম দিয়ে, যাঁরা স্বেচ্ছায় প্লাজমা দিতে পারবেন করোনা আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসার জন্য।
মারণ ভাইরাস করোনার এখনও পর্যন্ত কোনও ওষুধ নেই। নেই সঠিক কোনও চিকিৎসাও। তবে গবেষনায় এটা ধরা পড়েছে করোনাজয়ীর দেহে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে তা যেমন তাঁকে দ্বিতীয়বার সেই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচাচ্ছে, ঠিক তেমনভাবেই করোনা আক্রান্তদের দেহে তা চলে গেলে সেখানেও মারণ ভাইরাসটিকে জব্দ করে ওই রোগীকে সুস্থ করে তুলতে পারছে। এর জেরেই দেশে এখন প্লাজমা থেরাপি খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই প্লাজমা কেউ স্বেচ্ছায় দান না করলে তা পাওয়া যাবে না। তাই সেই চাহিদাপূরণ করতেই এবার নতুন উদ্যোগ নিলো লালবাজার।
ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার সেই প্লাজমা চিকিৎসার জন্য করোনাজয়ী পুলিশকর্মী ও অফিসাররা নিজেদের প্লাজমা দান করেছেন। এরপরেই অনুজ শর্মা সিদ্ধান্ত নেন কলকাতা পুলিশের যে সব কর্মী ও আধিকারিক করোনাকে জয় করেছেন তাঁরা যদি স্বেচ্ছায় প্লাজমা দিতে চান তাহলে বাহিনীও তাঁদের সাহায্য করবে। সেই জন্যই তৈরি করা হচ্ছে পৃথক তালিকা। সন্দেহ নেই এই প্রচেষ্টা কলকাতায় তথা রাজ্যের করোনা চিকিৎসায় অনেকটা সাহায্য করবে।