গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন যুদ্ধ নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। “চীন সীমান্তে ৪৫ বছর আমাদের কয়েকজন সেনাকে হারাতে হল।” বুধবার এক সাক্ষাৎকারে এমনই মন্তব্য করেছেন বিদেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, লাদাখের পূর্বে চীন সীমান্তে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, ১৯৬২ সালের চীনযুদ্ধের পর থেকে তা হয়নি। তাঁর কথায়, “১৯৬২ সালের পর এখন সবচেয়ে গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ৪৫ বছর বাদে আমরা ফের সীমান্তে কয়েকজন সেনাকে হারিয়েছি। সীমান্তের দু’পারে এখন যে সংখ্যায় সেনা মোতায়েন করা আছে, তাও অভুতপূর্ব।”
গত মে মাস থেকে লাদাখে চীন সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় চীনা সেনার সঙ্গে সঙ্ঘর্ষ হয় ভারতীয় সৈনিকদের। ২০ জন ভারতীয় সৈনিক নিহত হন। তারপরই ভারতে চীনা পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া হয়। অন্যদিকে সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর জন্য দফায় দফায় চীনের সঙ্গে আলোচনা হতে থাকে। সামরিক ও কূটনৈতিক, দুই স্তরেই কথাবার্তা হয়।
এদিন বিদেশমন্ত্রী বলেন, চীনকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা থাকলে তবেই দুই দেশের বন্ধুত্ব বজায় থাকবে। জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা যদি গত তিনটি দশকের ইতিহাস খতিয়ে দেখি, তাহলে বোঝা যাবে, এখনকার মতো পরিস্থিতি এর মধ্যে সৃষ্টি হয়নি। সাড়ে তিন মাস ধরে চীনের সঙ্গে আমরা দফায় দফায় আলোচনা করেছি। কিন্তু তাতেও সীমান্তে উত্তেজনা কমেনি।”
বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য, আগে কূটনৈতিক পথে সীমান্ত সমস্যার সমাধান করা যেত। তাঁর কথায়, “গত এক দশকে বার বার সীমান্তে সমস্যা দেখা দিয়েছে। দেপসাং, চুমার, ডোকলাম, নানা জায়গায় আমরা চীনাদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছি। প্রতিটি বিরোধই ছিল ভিন্ন চরিত্রের। কিন্তু তাদের মধ্যে একটি মিল ছিল। কূটনৈতিক পথে প্রতিটি বিরোধই মিটিয়ে নেওয়া গিয়েছে।” জয়শঙ্করের বক্তব্য, চীন যদি একতরফা সীমান্তে স্থিতাবস্থা ভঙ্গ না করে, ভারতের সঙ্গে ইতিপূর্বে যে চুক্তিগুলি হয়েছে সব মেনে চলে, তাহলেই দুই দেশের বিরোধের মীমাংসা হতে পারে।