২০১৬-র ৮ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে এসে গোটা দেশে পুরোনো পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাজারে আসে নতুন ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট। কিন্তু এর কোনও সুফল তো মেলেইনি বরং আরও বেড়েছে জাল নোটের কারবার। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্টেই এই তথ্য উঠে এসেছে যে, জাল নোটের কারবার বন্ধে চালু হওয়া ২ হাজারের নোটই সবচেয়ে বেশি জাল হচ্ছে। নোট বাতিলের পর গোটা দেশে যত জাল টাকা উদ্ধার হয়েছে তার ৫৬ শতাংশের বেশি মোদী সরকারের চালু করা ২ হাজার টাকার নোট। এই পরিস্থিতিতে সরকার দু’হাজার টাকার নোট তুলে দেবে বলে জল্পনা ছিল। ২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষে একটিও ২ হাজারের নোট ছাপানো হয়নি বলে জানিয়ে সেই জল্পনা আরও উস্কে দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এই আর্থিক বর্ষে সরকারের তরফে তাদের ২ হাজারের নোট ছাপানোর বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি বলেও জানানো হয়েছে। সম্প্রতি তাদের তরফে প্রকাশিত বার্ষিক রিপোর্টে এই কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি গত তিনটি আর্থিক বর্ষে এই নোটের সরবরাহ ক্রমশ কমেছে বলেও জানিয়েছে তারা।
আরবিআই-এর বার্ষিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশজুড়ে ৩৩ হাজার ৬৩২ লক্ষ ২ হাজারের নোট সরবরাহ করা হয়েছিল। কিন্তু, ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩২ হাজার ৯১০ লক্ষ ও ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত ২৭ হাজার ৩৯৮ লক্ষ সরবরাহ করা হয়। শতাংশের হিসাবে ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রায় .৩ শতাংশ সরবরাহ কমেছে। উল্টোদিকে গত তিন বছরে ২০০ ও ৫০০ টাকার নোটের সরবরাহ আগের থেকে অনেক বেড়েছে। কিন্তু, এবার লকডাউন ও করোনার কারণে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে গত বছরের তুলনায় সমস্ত নোটের সরবরাহ ২৩.৩ শতাংশ কমেছে। এর পাশাপাশি ওই রিপোর্টে দেশজুড়ে জাল নোটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে বলেও জানানো হয়েছে। তাদের তরফে দেওয়া ২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ব্যাঙ্কিং সেক্টরে মোট ২ লক্ষ ৯৬ হাজার ৬৯৫টি জাল নোট উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে ৪.৬ শতাংশ ও অন্যান্য ব্যাঙ্কে ৯৫.৪ শতাংশ জমা পড়েছে।