যোগী রাজ্যে নারীসুরক্ষার হাল যে ক্রমশই আরও খারাপ হচ্ছে প্রতিদিন, বারবারই মিলছে তাঁর প্রমাণ। কখনও উন্নাওয়ের আসিফা-কাণ্ড বা বিজেপি বিধায়কের বাড়ি চাকরি চাইতে যাওয়া কিশোরীকে নিগ্রহ, তো কখনও আবার তরুণীকে গণধর্ষণ বা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাতে আইনের ছাত্রীর শ্লীলতাহানী-ধর্ষণ — এমনই নানা ঘটনার জেরে বারবারই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে উত্তরপ্রদেশ। এই করোনা পর্বেও বজায় রয়েছে সেই ধারা। এবার ফের ন্যক্কারজনক ঘটনার স্বাক্ষী থাকল যোগীরাজ্য৷ কাজ দেওয়ার নাম করে বছর ১৫-র নাবালিকাকে মাদক খাইয়ে গণধর্ষণ৷ শুধু তাই নয় জোর করে তাকে দেহ ব্যবসায় নামার জন্য বাধ্য করা হয় বলেও অভিযোগ৷ ঘটনাটি ঘটেছে বারাণসীর রামনগরে৷ ১৬ আগস্ট দুষ্কৃতিদের হাত থেকে কোনওমতে পালিয়ে রামনগর পুলিশ আউটপোস্টে আসে ওই নাবালিকা৷ গোটা ঘটনা জানায় পুলিশকে৷ এরপরই তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের বাসিন্দা ওই নাবালিকাকে কাজ দেওয়ার কথা বলে ১৫ই জুন রামনগরের এক বিউটি পার্লারে নিয়ে আসে তারই গ্রামের চৌনার এলাকার এক মহিলা৷ সেদিন থেকে পার্লারে কাজ শুরু করে ওই নাবালিকা৷ অভিযোগ, ১৪ দিন পর থেকে ওই পার্লারের মালিক তার খাবারের সঙ্গে নানা ধরণের মাদক মিশিয়ে তাকে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করে৷ তাকে ওই পার্লারের মালিক নিজের বাড়িতে বন্দী করে রেখেছিল৷ সেখানে এক যুবক ধর্ষণ করে তাকে৷ এরপর বহুবার তাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে৷ তদন্ত শুরু করে রামনগর থানার পুলিশ জানতে পারে ওই নাবালিকার কাকা ২১ জুন চুনার থানায় ওই নাবালিকার নামে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল৷ বর্তমানে নির্যাতিতা নাবালিকাকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, ওই নাবালিকা প্রায় ১২ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে৷ তাদের মধ্যে তিন জন মহিলাও রয়েছে৷ তারা সবাই বর্তমানে পলাতক৷ তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ৷ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক দিনের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে একাধিক ধর্ষণ-খুনের ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বিরোধীদের অভিযোগ,যোগীশাসনে উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ কায়েম হয়েছে। মেয়েরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। হেনস্থার ভয়ে বাড়ির বাইরে বেরোনের সাহস পাচ্ছে না। ধর্ষক, খুনি, অপহরণকারীদের কেন দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে লক্ষিমপুর খেরির ঘটনা যোগীকে সবথেকে বেশি অস্বস্তিতে ফেলে। খেরিতে বছর তেরোর এক নাবালিকাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। ঘটনার পরদিন আখখেত থেকে ওই কিশোরীর বিকৃত দেহ উদ্ধার হয়। মেয়েটির বাবা দাবি করেন, ধর্ষকরা তাঁর মেয়ের চোখ উপড়ে নেয়। জিভও কেটে ফেলেছিল। যদিও পুলিশ তা মানেনি। তবে, ধর্ষণের পর কিশোরীকে যে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছিল, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সে প্রমাণ মিলেছে।