পৌষমেলার মাঠে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের নির্মিত পাঁচিল ভাঙায় পড়ুয়াদের প্রতিরোধ করতে পুলিশকে সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজেই? তার জেরেই কি পুলিশি হামলা চলে তাঁদের উপর? সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া মাত্র ২৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ঘিরে এসব প্রশ্নই সামনে আসছে। ফলে স্ক্যানারে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ভূমিকাও।
ভাইরাল ভিডিওটিতে শোনা গিয়েছে এক পুলিশ কর্মীর সঙ্গে উপাচার্যের একটি কথোপকথন। সেখানে এক পুলিশ কর্মী তাঁকে জানাচ্ছেন যে আহত পড়ুয়াদের নামের তালিকা তিনি উপাচার্যের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এরপরই ওই পুলিশকে বলতে শোনা যায়, ‘স্যর, আপনার গ্রিন সিগন্যাল না থাকলে তো আমরা কিছু করতে পারি না।’ উপাচার্য এরপর তাঁকে বলেন, পরেরদিন বিকেলে যেন ওই পুলিশ কর্মী তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। এই সংলাপ ভাইরাল হতেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। তাহলে সেদিন যে স্থানীয় ও পড়ুয়াদের একাংশ পাঁচিল ভাঙছিল, তাঁদের প্রতিরোধ করার জন্য পুলিশকে সরাসরি বলেছিলেন উপাচার্য নিজেই? বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়ে তিনি কি পুলিশকে এই নির্দেশ দিতে পারেন? পুলিশই বা কেন আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ না নিয়ে উপাচার্যের নির্দেশ মেনে কাজ করবে? এসব হাজারও প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে শান্তিনিকেতনে।
গত সোমবার, শান্তিনিকেতনের মেলার মাঠে উপাচার্য নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পাঁচিল তোলার কাজ করছিলেন। কিন্তু স্থানীয় ও বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের একাংশ রীতিমত পে-লোডার নিয়ে গিয়ে তা ভেঙে দেয়। পড়াশোনার মুক্ত পরিবেশে কেন পাঁচিল উঠবে, এই প্রশ্ন তুলেই ভেঙে ফেলা হয় নির্মাণ। এই ঘটনা ঘিরে এবার নজিরবিহীন এক পরিস্থিতির মুখে পড়ে দেশের ঐতিহ্যমণ্ডিত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী। সেই জল এখনই গড়িয়েছে অনেকটা দূর। ঘটনায় রাজনীতির রং লাগার অভিযোগ উঠেছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে নালিশ ঠুকেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় উপাচার্যের সঙ্গে পুলিশের কথোপকথনের ওই ভিডিওটা ভাইরাল হওয়ার পর জট আরও পেকেছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের।