দলের সঙ্গে মতানৈক্য হওয়ায় বহুদিন আগেই বিজেপি ছেড়েছিলেন। আর এবার আগামী ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের লড়াইয়ের আগে শুরু করলেন নতুন রাজনৈতিক কেরিয়ার। আজ বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র কৃশাণু মিত্র যোগ দিলেন তৃণমূলে। এদিন তৃণমূল ভবনে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে ঘাসফুলের পতাকা তুলে নিলেন তিনি। এর ফলে আরও খানিকটা শক্তিশালী হল রাজ্যের শাসকদল। কৃশাণু মিত্রর পাশাপাশি এদিনও বিভিন্ন জেলা থেকে বিজেপি নেতা-কর্মীদের বেশ কয়েকজন যোগ দেন তৃণমূলে।
আরএসএস, বিজেপির সঙ্গে কৃশাণু মিত্রর সম্পর্ক বহু বছরের। বঙ্গ বিজেপির সক্রিয় কর্মী থেকে দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে কামারহাটি কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেছিলেন। কিন্তু সেইসময় সিপিআইএমের মানস মুখোপাধ্যায়ের কাছে ভোটে হেরে যান তিনি। এরপরই রাহুল সিনহা ঘনিষ্ঠ নেতা তথা দলের মুখপাত্র অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁকে ইচ্ছে করে হারানো হয়েছে এবং তার নেপথ্যে দলেরই একাংশের হাত আছে।
এ নিয়ে মূলত বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গেই ধীরে ধীরে মতবিরোধ তৈরি হতে শুরু করে কৃশাণু মিত্রর। এছাড়াও নিজের কাজেও বারংবার বাঁধা পাচ্ছিলেন দলের ভেতর থেকেই। ২০১৭ সাল নাগাদ তা এতটাই চরমে ওঠে যে কৃশাণুবাবু দলের সমস্ত দায়িত্ব ছেড়ে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। অবশ্য সেইসময় তাঁর দলত্যাগকে তেমন গুরুত্ব দিতে চাননি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য ছিল, কৃশাণু দলে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছিলেন। তাই তাঁর পদত্যাগে বঙ্গ বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না।
এরপর থেকেই তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছিলই। মদন মিত্রর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বারবার তা উস্কে দিয়েছিল। শেষপর্যন্ত জল্পনা সত্যি করে কৃশাণু মিত্র আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন যুযুধান শিবির, রাজ্যের শাসকদলে। এদিন তৃণমূল ভবনে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর হাতে পতাকা তুলে দিয়ে বলেন, “বঙ্গ বিজেপির প্রথম সারির নেতারা এখন তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। আমার পাশেই বসে রয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র কৃশাণু মিত্র। ফলে একুশের আগে বিজেপির গড়ে ফের ভাঙন ধরালাম আমরা।”