গত মাসে বিক্ষুব্ধ সচিন পাইলট এবং তাঁর অনুগামীদের ‘বিদ্রোহ’ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, তখন নতুন করে গেহলট সরকারের মাথা ব্যথা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বসপা সুপ্রিমো মায়াবতী। আচমকাই দল বদল করে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া ৬ বিধায়কের উপর অধিকার দাবি করে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন তিনি৷ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, ‘বিধায়ক চুরি করেছেন গেহলট। ওঁকে উচিত শিক্ষা দেব।’ কিন্তু তখন আস্থা ভোট হয়নি। অনাস্থাও আনেনি বিজেপি। তবে আজ, শুক্রবার রাজস্থান বিধানসভার প্রথম দিনেই অশোক গেহলট সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনবে বিজেপি। সেখানে যাতে বসপার টিকিটে জেতা ছয় বিধায়ক কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোট দেন সে ব্যাপারে কার্যত হুইপ জারি করেছেন বহেনজি। গেহলটের বিরুদ্ধে ভোট না দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এই ছয় বিধায়ক যাতে আস্থা ভোটে অংশ নিতে না পারেন সে ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল হয়েছিল। আবেদনকারীরা বলেছিলেন, যেভাবে ছয় বিএসপি বিধায়ক কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন তা অবৈধ। সুতরাং তাঁদের যেন আস্থাভোটে অংশ না নিতে দেওয়া হয়। শীর্ষ আদালত বৃহস্পতিবার সেই আর্জি নাকচ করে দিয়েছে। ছয় বিধায়ক ভোট দিতে না পারলে আস্থাভোটে গরিষ্ঠতা প্রমাণ করা কঠিন হত গেহলট সরকারের পক্ষে। গেহলটের সমালোচনা করে মায়াবতী বলেন, ‘রাজস্থানে ভোটের ফল বেরোনর পরে আমাদের ছয় বিধায়ক কংগ্রেসকে নিঃশর্ত সমর্থন করেছিলেন। দুর্ভাগ্যের বিষয়, গেহলট অসাধু উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের ছয় বিধায়ককে তাঁর দলে যোগ দেওয়ালেন। তিনি অসাংবিধানিক কাজ করেছিলেন। এর আগে ক্ষমতায় থাকার সময়েও তিনি একই কাজ করেছিলেন।’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া-সহ বিজেপি নেতৃত্ব বৈঠকে বসেন। মরুরাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির পরে এটাই ছিল বিজেপির পরিষদীয় দলের প্রথম বৈঠক। বৃহস্পতিবার, সেই বৈঠকের পরে রাজস্থান বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক গুলাবচাঁদ কাটারিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘শুক্রবার থেকে রাজস্থান বিধানসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে। আর তার প্রথম দিনেই আনা হবে অনাস্থা প্রস্তাব। এই বিষয়ে এদিন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ যদিও রাজস্থান বিধানসভায় ২০০টি আসন থাকায় সরকার গড়তে দরকার ১০১ জন বিধায়কের সমর্থন। আগেই গেহলটের কাছে ১০২ বিধায়কের সমর্থন ছিল। বিএসপি থেকে কংগ্রেসে আসা এই ছয় বিধায়কও ছিলেন তার মধ্যে। এখন পাইলটও ফের কাজে যোগ দিয়েছেন। তাঁর অনুগামী বিধায়কের সংখ্যা ১৮। তাই সবমিলিয়ে মায়াবতীর হুইপ যে গেহলটের কাছে মোটেই অস্বস্তিদায়ক নয়, তা বলাই বাহুল্য।