কলকাতায় এই প্রথম! সূত্র থেকে পাওয়া খবর, এবার কলকাতা থেকে চীন পর্যন্ত ছুটবে বুলেট ট্রেন। চীনের কুনমিং প্রদেশ থেকে এই ট্রেন ঢাকা এবং মায়ানমার হয়ে আসবে কলকাতায়। অর্থাৎ কমবে দূরত্ব। বাঁচবে সময়।
বুধবার কলকাতায় চীনের কনস্যুলেট জেনারেল এবং অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন(ওআরএফ)- এর যৌথ উদ্যোগে ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কনফারেন্স’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় এ কথা জানান কলকাতায় চীনের কনসাল জেনারেল মা ঝানয়ু। কনসাল জেনারেল বলেন, ‘একজন বিশেষজ্ঞ এ ব্যাপারে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। বিষয়টি আমরা ভেবে দেখছি। এর ফলে গোটা এশিয়াকেই যুক্ত করা যাবে।’ তিনি আরও বলেন, আমরা ২৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রেলপথের বিভিন্ন অংশে শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে পারি। তাতে যেসব দেশের ওপর দিয়ে এই রেলপথ যাবে, তাদের সবারই অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা থাকবে। কুনমিংয়ে ২০১৫ সালে যে গ্রেটার মেকং সাবরিজিয়ন সম্মেলন হয়েছিল, সেখানেও এ পরিকল্পনার উল্লেখ করা হয়েছিল বলে জানান ঝানয়ু।
কলকাতা থেকে আকাশপথে কুনমিংয়ের দূরত্ব ১৪৮৬ কিলোমিটারের কাছাকাছি। দু’দেশের নাগরিকেরা বিমানেই মূলত যাতায়াত করেন। চীনে যে বুলেট ট্রেন চালু আছে, প্রতি ঘণ্টায় তার সর্বোচ্চ গতিবেগ ৩৫০ কিলোমিটার। জানা গেছে, কুনমিং প্রদেশে পর্যটনের প্রসার নিয়ে উৎসাহী চীন। ফলে আগামী দিনে পর্যটনের আরও প্রসার এবং পূর্ব ভারত বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্কের বিষয়ে উৎসাহী চীন। শোনা যাচ্ছে কলকাতার একজন ব্যবসায়ী ৯০০–র কাছাকাছি লোকজন নিয়ে তাঁর বিয়ের অনুষ্ঠান সারতে কুনমিঙে যাচ্ছেন।
এদিন কনসাল জেনারেল জানিয়েছেন, চলতি বছরের জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চীন সফর করার কথা থাকলেও বিষয়টি শেষ পর্যন্ত বাতিল করেন তিনি। পদ্ধতিগত ত্রুটির জন্য ওই সফর বাতিল হয়েছিল। তাঁর সফর নিয়ে খুবই উৎসাহী চীন। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে চিঠি পাঠানো ছাড়াও বিষয়টি নিয়ে চীনের তরফ থেকে আরও একবার অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এবছর বিধাননগরের বি জে ব্লকের দুর্গাপুজোয় সহায়তা করছে চীন। রাজ্য সরকার আয়োজিত পুজো কার্নিভ্যালে যাতে এই পুজোকেও যুক্ত করা হয়, সে–বিষয়ে উৎসাহী তাঁরা। সভায় উপস্থিত বক্তারা এদিন বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে চীন ও পূর্ব ভারতের পারস্পরিক সম্পর্ক বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেন। ছিলেন ওআরএফ–এর ডিরেক্টর অশোক ধর সহ ভারত ও চীনের বিশিষ্টরা। ভারতের প্রাক্তন মেজর জেনারেল অরুণ রায় বলেন, সম্পর্কের উন্নতির জন্য সবার আগে দুটি দেশকে নিজেদের মধ্যে বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। সব ঠিকঠাক চললে ও এই পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন ঘটলে, শীঘ্রই কলকাতা থেকে চীন পর্যন্ত ছুটবে বুলেট ট্রেন।