কমল নাথ, শশী থারুর থেকে শুরু করে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, রাহুল গান্ধী পর্যন্ত। নিজেদের পুরনো অবস্থানের খানিকটা বিপক্ষে গিয়ে একযোগে রাম মন্দিরের ভূমিপুজোকে সমর্থন করেছেন কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্যে স্পষ্ট, বিজেপির উগ্র হিন্দুত্বের পাল্টা হিসেবে নরম হিন্দুত্বের পথে হাঁটতে চলেছেন তাঁরা। আর তাতেই বেজায় খাপ্পা কেরালার মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা পিনারাই বিজয়ন। তাঁর সাফ কথা, কংগ্রেসের যদি ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকত, তাহলে আজ অযোধ্যায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।
অযোধ্যায় রাম মন্দির নিয়ে সিপিএমের অবস্থান কী? পিনারাই বিজয়ন বলছেন, ‘সিপিএম অনেক আগেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। আমি বারবার এক কথা বলতে পারব না। আমাদের দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। আমাদের ভাবা উচিত এটাকে কীভাবে রোখা যাবে। করোনা মহামারী বহু মানুষকে চরম দারিদ্রের অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। আগে এগুলো ভাবতে হবে। অন্য সবকিছু পরে ভাবা যাবে।’ মন্দির ইস্যুতে নরম হিন্দুত্বের পথে হাঁটায় কংগ্রেসকে একপ্রকার তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ করেন বিজয়ন। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ‘আমি কংগ্রেসের অবস্থানে অবাক হইনি। আমরা সবাই জানি কংগ্রেসের কী অবস্থান। আমরা সবাই জানি রাজীব গান্ধী কী করেছিলেন, নরসিমা রাও কী করেছিলেন। ওদের আজকের প্রতিক্রিয়া সেই ইতিহাসেরই অংশ। কংগ্রেসের যদি ধর্মনিরপক্ষতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকত, তাহলে আজকের ভারতের এই অবস্থা হত না। ওঁরা চিরদিন নরম হিন্দুত্বের পথে হেঁটেছে। যখন সংঘের কর্মীরা বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার জন্য এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন কারা চোখ বন্ধ করে ছিল?’
মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের এই আক্রমণাত্মক মন্তব্যে বেশ বেকায়দায় পড়েছে কংগ্রেস। কারণ, আগামী বছরই কেরলে নির্বাচন। আর কেরালার নির্বাচনে ধর্মনিরপেক্ষতা চিরদিনই একটা বড় ভূমিকা নেই। স্বাভাবিকভাবেই তড়িঘড়ি নিজেদের অবস্থানের সাফাই দিতে আসরে নামেন শশী থারুর। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস কোনওদিনই অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের বিরোধী ছিল না। কিন্তু সেটা বর্বরভাবে মসজিদ ধ্বংস করে নয়। বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা বলছেন, আমরা নাকি বিজেপির মতো কাজ করছি। হ্যাঁ, কংগ্রেসের বহু নেতা রাম মন্দিরকে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু আমরা কখনও হিন্দুকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে উসকানি দিইনি।’