দুই দেশের কমান্ডার স্তরের বৈঠকে সংঘাত এড়াতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে সেনা পিছু হঠবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল৷ কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত মেনে এখনও চীনা সেনা লাদাখ থেকে পিছু না হঠায় ক্ষুব্ধ সেখানকার অন্যতম প্রধান বৌদ্ধ ধর্মগুরু রিজগিন স্পালবার। তাঁর স্পষ্ট কথা, পূর্ব লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে মোদী সরকার অকারণ লুকোছাপা করছে। চীন আদৌ তাদের সেনা সরায়নি। ভারতের ভূখণ্ড ছেড়ে এক পা-ও সরেনি তারা। সংঘর্ষের সময়ে এই এলাকার ছবিটা যা ছিল, এখনও ঠিক তেমনই রয়েছে। কেবল দু’দেশের সেনাদের হাতাহাতিটা বন্ধ হয়েছে। আর এ সবের মধ্যে সব চেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছেন বহু কাল ধরে এই এলাকায় বসবাস করা যাযাবরেরা। তাদের এক মাত্র জীবিকা পশুচারণ বন্ধ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, লাদাখের অধিকাংশ বাসিন্দা বৌদ্ধ। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পরে গোটা লাদাখ উৎসবে মেতে উঠেছিল। কিন্তু কেন্দ্রের মোদী সরকার পূর্ব লাদাখে চীন সীমান্তের পরিস্থিতি যে ভাবে মোকাবিলা করছে, তা নিয়ে নতুন এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। ধর্মগুরু রিজগিন বলছেন, ‘আমাদের সরকার যে চীনকে কড়া বার্তা দিতে পারেনি সেটা পরিষ্কার। সেই জন্যই চীন এত কিছুর পরেও ভারতের ভূখণ্ড ছেড়ে নড়েনি। এখন তারা সেই ভূখণ্ড তাদের বলে দাবি করছে। হাজার হাজার চিনা সেনাও এই এলাকায় রয়ে গিয়েছে।’ ধর্মগুরুর প্রশ্ন— এর পরেও কীভাবে কেন্দ্র বলছে যে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে?
ধর্মগুরুর কথায়, এই এলাকার মানুষের প্রশ্ন— দখলদারদের প্রতি মোদী সরকারের মনোভাব কেন এত নরম? তারা শক্ত অবস্থান নিতে কেন পিছপা হচ্ছে? তিনি বলেন, ‘এলাকার বাসিন্দারা সরকারের এই মনোভাবে উদ্বিগ্ন। চিনা সেনারা যখন খুশি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ঢুকে আসছে। এখন আবার একটা বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড নিজেদের বলে দাবি করছে তারা। বাসিন্দাদের উদ্বেগ স্বাভাবিক।’ ধর্মগুরু রিগজিন জানান, এই বার অন্তত ভারতের মনোভাব পরিবর্তন করা উচিত। নীতি বদলানো উচিত। চীনকে মোদী সরকারের এমন বার্তা দেওয়া উচিত, যাতে এর পরে আর ভারতের ভূখণ্ডে পা-রাখার কথা তারা না ভাবে। তাঁর সাফ কথা, ‘আর উচিত লুকোছাপা না-করা। আমাদের সরকার চীনকে স্পষ্ট বলুক, দখলদারির চেষ্টা আর সহ্য করা হবে না।’