একবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ফের হওয়া ভয়ানক বন্যায় গতকাল আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে আসামে। পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে বন্যার ফলে বলি হয়েছেন ৯৩ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৮ লক্ষেরও বেশি মানুষ। আসামের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট তাদের বুলেটিনে এমনটাই জানিয়েছে। এখনও পর্যন্ত বন্যায় ডুবে গিয়েছে সেই রাজ্যের ২৬টি জেলা। এ যাবৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৮,৩২,৪১০ জন।
নতুন করে বন্যার জল ঢুকেছে দধিয়া গ্রামে। ডুবে গিয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর। কোনওমতে নৌকা করে নিরাপদে এখানে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। এখানকার জেলা কমিশনার পল্লব ঝা জানিয়েছেন, চলতি বছর এই নিয়ে তিন বার বন্যা হয়েছে দধিয়া গ্রামে বন্যা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এখানে বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। প্রায় ৩০০টি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে এই ভয়ঙ্কর বন্যায়।
অন্যদিকে আসামের পরিবেশ এবং বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বার আসামে বন্যায় কম বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এ বছর এই নিয়ে তিন বার বন্যা হয়েছে আসামে। তবে ২০১৯ সালের তুলনায় এ বছর কম বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে বন্যার ফলে। চলতি বছর এখনও পর্যন্ত কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্ক এবং টাইগার রিজার্ভ থেকে ১৪৩টি প্রাণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। মন্ত্রী আরও বলেছেন, প্রতি বছরই বন্যপ্রাণ উদ্ধারের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি এবং উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
বন্যার প্রভাব পড়েছে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানেও। ইতিমধ্যেই সেখানে জলে ডুবে ১২৩ টি পশুর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ১২টি একশৃঙ্গ গন্ডারও রয়েছে। বাকি পশুদের মধ্যে ৯৩টি হরিণ ও চারটি মহিষেরও মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান এবং টাইগার রিজার্ভের প্রায় ৯০ শতাংশ বর্তমানে জলে ডুবে গিয়েছে। বন্যার জল থেকে প্রাণ বাঁচাতে, কোথাও বা জলের তোড়ে ভেসে লোকালয়ে হাজির হয়েছে বাঘ-গণ্ডার। তবে বন দফতরের কর্মীরা সর্বদা সজাগ থেকে বন্যপ্রাণীদের রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।