রাজা রামমোহন রায়ের বংশধর তিনি। সেই কারণেই বোধহয় তাঁর অসীম জেদ। গত ১ মাস ধরে সেই জেদকেই পুঁজি করে মারণ করোনা ভাইরাসের সঙ্গে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেই লড়াই-ই থেমে গেল আজ সকালে। করোনার কাছেই নিজের প্রাণ সঁপে দিলেন তিনি। মৃত্যু হল শ্রীরামপুর পুরসভার বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর পিনাকী ভট্টাচার্যের।
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একমাত্র হাতিয়ার হিসাবে ঘরের দরজা বন্ধ করেছিলেন সকলে। কিন্তু সেই সময় নিজেকে গৃহবন্দী না রেখে বারবার দৌড়ে গিয়ে দুঃস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বছর ঊনসত্তরের পিনাকী ভট্টাচার্য। অসহায়দের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন ত্রাণ। সেই সব ভাল কাজের ফাঁকেই নিজের অজান্তেই তাঁর শরীরে থাবা বসায় মারণ করোনা ভাইরাস।
তাঁর পাশাপাশি আক্রান্ত হন তাঁর স্ত্রী এবং ছেলেও। যদিও বর্তমানে তাঁরা সুস্থ। করোনা আক্রান্ত জানার পরেই পিনাকীবাবুকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় মাসখানেক মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েন তিনি। গত এক মাসে বারবার হারতে হারতে জিতেছেন। তবে লড়াই থামেনি। কিন্তু বুধবার সকালে ঘটল ব্যতিক্রম। নিজের জীবনযুদ্ধে একেবারেই হেরে গেলেন পিনাকীবাবু। শেষ হল তাঁর অসম লড়াই।
নিজের এলাকায় সৎ রাজনৈতিক নেতা হিসেবেই তিনি পরিচিত ছিলেন। দু’বারের কাউন্সিলর পিনাকীবাবু ২০১৫ সালে পুর নির্বাচনে শ্রীরামপুর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হল।”