লাদাখ সীমান্তের উত্তেজনা প্রশমনের কোনও সম্ভাবনা এখনও দেখা যাচ্ছে না। ভারতের তরফে চীনকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। নিজেদের ভূখণ্ডের এক ইঞ্চিও ছেড়ে দেওয়া হবে না। চীনকে জানানো হয়েছে, আগে তারা আগের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুক। তার পর পরবর্তী কথাবার্তা এগোবে। লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার ২০ জন সেনা জওয়ান শহীদ হয়েছে। এরই মধ্যে সেনার মনোবল বাড়াতে লেহতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার আন্দামান নিকোবার দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে নড়েচড়ে বসল ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রক। চীনের মোকাবিলায় ভারত মহাসাগরের উপর আন্দামান নিকোবার দ্বীপপুঞ্জের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে নয়াদিল্লীর সাউথ ব্লক।
অনেকদিন আগে থেকেই আন্দামানে সেনা সংখ্যা বাড়ানোর কথাবার্তা চলছিল। এমনকী ওই এলাকায় সেনার অবস্থান বদল নিয়েও একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের উৎপাত বাড়তে পারে বলে আগে থেকেই নড়চড়ে বসল প্রতিরক্ষামন্ত্রক। বাড়ানো হল সেনার সংখ্যা। বদল আনা হল ওই অঞ্চলে সেনার পরিকাঠামোতেও। লাদাখের পর আন্দামান অঞ্চলেও চীন আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২০০১ সালে আন্দামানে প্রথম কমান্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দেশের প্রথম এবং একমাত্র থিয়েটার কমান্ড এখনও পর্যন্ত সেটিই।
ভারত মহাসাগরের ওপর দিয়ে আন্দামান-নিকোবরের কাছ দিয়ে জ্বালানি তেল আমদানি করে চিন। সেই বিষয়টি মাথা রেখেই এবার আন্দামান-নিকোবর কম্যান্ডের গুরুত্ব বাড়ানো হচ্ছে। উত্তর আন্দামানের শিবপুরে নৌসেনার এয়ার স্টেশন আইএনএস কোহাসারের রানওয়ের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ক্যাম্পবেলে আইএনএস বাজের রানওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়ানোরও কথা চলছে। প্রয়োজনে বড় যুদ্ধবিমান যাতে এখান থেকে কাজ করতে পারে, তার জন্য বাড়ানো হচ্ছে রানওয়ের দৈর্ঘ্য।
আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে সেনা কর্মকাণ্ড বাড়ানোর জন্য যে রোল-অন প্ল্যান নেওয়া হয়েছে, তাতে ১০ বছরের জন্য প্রতিরক্ষা পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। আরও যুদ্ধবিমান, নৌজাহাজ ও সেনা এখানে মোতায়েন করা হবে। এই কাজে ৫৬৫০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে বলে খবর। ২০২৭-এর মধ্যে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে সেনা পরিকাঠামো বৃদ্ধির কাজ সম্পুর্ণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এখানে আগামী বছরে যুদ্ধবিমানের পাকাপাকি ঘাঁটি তৈরি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।