পূর্ব লাদাখে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই উত্তেজনা চরমে। ইতিমধ্যেই সেখানের গালওয়ান উপত্যকায় চীনের আক্রমণে শহীদ হয়েছেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। তারপর থেকেই সব রকম খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেখানে পৌঁছে গিয়েছে ৪৫ হাজার সেনা, টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক, জমি থেকে আকাশমুখী ক্ষেপণাস্ত্র। বসেছে এয়ার সার্ভেল্যান্স সিস্টেম। এরই মধ্যে গালওয়ান উপত্যকায় নতুন করে চীনের আরও ১৬টি সেনা ছাউনির ছবি ধরা পড়েছে সাম্প্রতিক উপগ্রহচিত্রে।
গত ২২ জুনের উপগ্রহচিত্রে গালওয়ানে চীনের তৈরি পাকা পরিকাঠামোর হদিস মিলেছিল। এ বার খবরে প্রকাশ, ২৫ ও ২৬ তারিখের ছবিতে আরও ১৬টি কালো ত্রিপলে ঢাকা সেনাছাউনি দেখা যাচ্ছে, যা আগের ছবিতে ছিল না। অর্থাৎ চীন এই পরিস্থিতিতেও নতুন করে সেখানে সেনা মোতায়েন করে চলেছে। এমতাবস্থায় দিল্লীর সামরিক নীতি হল, নিজে থেকে আগ্রাসী পদক্ষেপ নয়। কিন্তু খারাপ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সাজসরঞ্জামে যাতে ঘাটতি না হয়, তার ব্যবস্থা করে রাখা।
বিরোধী রাজনৈতিক শিবির প্রশ্ন তুলছে, সে না হয় হল। কিন্তু চীনা সেনা যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ১৮ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে তাঁবু গেড়ে রয়েছে, তাদের ফেরত পাঠানোর কোনও উপায় কি আদৌ রয়েছে কেন্দ্রের কাছে? বিরোধীদের মতে, ভারত এখন যে সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছে, তার লক্ষ্য মূলত হল, চীন যাতে নতুন করে আর জমি দখল করতে না পারে। গালওয়ান উপত্যকার মতো আরও বিস্তীর্ণ এলাকা যাতে হাতছাড়া না হয়। কিন্তু গালওয়ানে দখল হওয়া কয়েকশো বর্গ কিলোমিটার জমির কী হবে?
বিরোধীদের এই প্রশ্ন শুনে অবশ্য মুখে কুলুপ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের। তারা সেনা ও সরঞ্জাম মোতায়েন পৌঁছনো, লাদাখের দৌলত বেগ ওল্ডি, ফুকচে, নায়োমা এয়ারস্ট্রিপ সক্রিয় করা, ৬৫টি পেট্রোলিং পয়েন্টে বাড়তি সেনা মোতায়েন নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু হৃত জমির পুনরুদ্ধার কীভাবে করা হবে, তা নিয়ে জবাব নেই। কূটনৈতিক স্তরে নানা ভাবে চীনকে ফিরে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এত সহজে যে এটা সম্ভব নয়, তা ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করছেন কমবেশি প্রত্যেক সরকারি কর্তারাই। দু’দিন আগেই চীনের সঙ্গে যুগ্মসচিব স্তরে বৈঠকের পরে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রেও জানানো হয়, এই প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি, দ্রুত মেটার নয়।