কথা ছিল লকডাউনের পর পরিবারের কাছে ফিরবে ছেলে। কথা রাখল সে। তবে কফিনবন্দি হয়ে শেষবারের মতো পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন শহীদ জওয়ান বিপুল রায়। আজ আর কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ি এসে পৌঁছবে তাঁর মরদেহ। ঘরের ছেলেকে শেষবার দেখার অপেক্ষায় গোটা গ্রাম।
তাঁর বৃদ্ধ বাবা নিরেন রায় জানান, ক্ষেত মজুর পরিবার। পরিবারের মেরুদন্ড ছিল বড় ছেলে বিপুল। সেই মেরুদন্ডটাই ভেঙ্গে গেল! কিছুতেই বিপুলের এই চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না বৃদ্ধ নিরেনবাবু। এদিন তিনি বলেন, “ভাবছি, পরিবারটার কি হবে। ছোটবেলা থেকেই সাহসী। সৈনিক হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল ওঁর মনে। যুদ্ধক্ষেত্রে ও প্রাণ দেবে এটা আমরা ভাবতে পারিনি।” বিপুলের মা শোকে পাথর।
বিপুল রায়ের পরিবারের সাথে বৃহস্পতিবার দেখা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। পরিবারের সদস্যকে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর সেই বার্তা নিয়েই শুক্রবার শহীদের বাড়িতে এসে পরিবারের সাথে দেখা করেন সৌরভ চক্রবর্তী। শহীদের মঞ্চের কাজ ঘুরে দেখেন বিধায়ক৷ তিনি বলেন,”বিপুলের বীর যোদ্ধা। আমাদের গর্ব। আলিপুরদুয়ার শহরে বিপুলকে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ বেদি করা হবে। গ্রামেও হবে শহীদ স্তম্ভ।”
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিপুলের ভাই বকুলকে ভুটান থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বিপুলের স্ত্রী রূম্পা ও মেয়ে তমন্যাও শুক্রবার প্লেনে মিরাট থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরবেন। তাঁদের উপস্থিতিতে বিপুলের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। এদিন সারাদিন মুখভার ছিল আকাশেরও। আলিপুরদুয়ার জেলাজুড়ে ভারী বৃষ্টি। যেন বীর শহিদের শেষ যাত্রায় বিন্দিপাড়ার সঙ্গে চোখের জল মিশেছে প্রকৃতিরও। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করে চলছে শহীদ মঞ্চ বানানোর কাজ।