ভারত ও চীনের মধ্যে যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, তা কি আরও বাড়তে চলেছে? নাকি চেহারা নেবে কোনও যুদ্ধের? আপাতত বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলির নানা মত। এমনকি সহমতে পৌঁছতে পারেননি বিশেষজ্ঞদেরও একাংশ। তবে মোটের উপর সকলেরই মত, যুদ্ধ না হলেও একটা উত্তেজনা থাকবে, যা সহজে থিতিয়ে যাবে না।
বিদেশি সংবাদ মাধ্যম গুলোর মধ্যে কেউ বলছেন, নিজের নিজের দেশের মানুষের ভাবাবেগের কথা মাথায় রাখতে গিয়ে এখনই উত্তেজনা থিতিয়ে নিয়ে যাওয়ার রাস্তায় না-ও হাঁটতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। আবার কেউ বলছেন, করোনা সংক্রমণের জেরে দু’টি দেশই যে ভাবে ব্যাতিব্যস্ত, তাতে এই মুহূর্তে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিটা কেউই নিতে চাইবে না। তবে আদতে কি হবে এখন সেটাই দেখার।
নিউ ইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ক্রিস্টোফার ক্ল্যারি মার্কিন দৈনিক ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এ প্রকাশিত তাঁর নিবন্ধে বলেছেন, “ভারত কী করবে, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। বিশ্বে ভারত শক্তিশালী হয়ে উঠছে, এটা বোঝাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতের বিদেশনীতিকে কিছুটা আগ্রাসী করে তুলতে চাইছে। করে তুলেছেও। দেশে জঙ্গী হানাদারির পর পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতের বিমান-হানার মধ্যেই তার ছাপ স্পষ্ট হয়ে যায়। সেই বিমান-হানার নির্দেশ দিয়েছিলেন মোদীই। যা যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল দু’দেশের মধ্যে।’’
‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এ প্রকাশিত নিবন্ধে সিঙ্গাপুরের প্রাক্তন কূটনীতিক বিলহারি কৌশিকান লিখেছেন, “মোদী ও শি দুজনেই জাতীয়বাদী আবেগকে উস্কে দিয়েছেন। তাই তাঁরা এখন উত্তেজনা থিতিয়ে নিয়ে যাওয়ায় চেষ্টা করলেও নাগরিকদের ভাবাবেগের চাপে তা কতটা করতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’
তবে ভারত এখন চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি নিতে চাইবে না বলেই মনে করেন দিল্লীর সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের অধ্যাপক ভারত করনাড। তাঁর বক্তব্য, “ভারত যেটা করতে চাইছে, সেটা করার মতো অবস্থায় সে নেই। মোদী সরকার খুবই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য এখন আমরা মোটেই প্রস্তুত নই।’’