গত ২ দিন ধরে চীনের সঙ্গে চলতে থাকা সঙ্ঘর্ষের আবহের মধ্যেই মিলল আরও এক দফা উদ্বেগের খবর। গত ২৪ ঘণ্টায় ফোর্ট উইলিয়ামে করোনার শিকার হলেন সেনা অফিসার, জওয়ান ও কর্মী মিলিয়ে মোট ১৮ জন। পূর্বাঞ্চলের সেনা দফতরের একসঙ্গে ১৮ জন আক্রান্ত হওয়ায় ৫০ জনের বেশি কোয়ারেন্টাইনে চলে গিয়েছেন।
এদিকে, রামকৃষ্ণ মিশন সেবাসদন হাসপাতালে ৪ জন নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। মিশনের মহারাজ, রোগী ও কর্মী মিলিয়ে এদিন পর্যন্ত ৫৬ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন। কলকাতা পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘ফোর্ট উইলিয়াম, মিশন, বাগবাজার বস্তি-সহ ১৩৭ জন গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। র্যানডম রিপোর্টের জেরে মুচিবাজারে স্যানিটাইজেশন ও বিক্রেতাদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং আর্সেনিকা অ্যালবামা ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে।’
উত্তরের উল্টোডাঙার মুচিবাজারে র্যানডম স্যাম্পেল সংগ্রহে ১০০ জন বিক্রেতার লালারস পরীক্ষায় ৫ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ল। এই ৫ জন বিক্রেতার মধ্যে তিনজনের শরীরে কোভিডের কোনও উপসর্গ ছিল না। বাগবাজারের বস্তিতেও র্যানডম পদ্ধতিতে ৪৫ জনের লালারস সংগ্রহ করেছিল পুরসভা। তার মধ্যে ১৬ জনেরই করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। আক্রান্তদের একজন বাঙুর ও অন্য ১৫ জনকে রাজারহাটে ভর্তি করা হয়েছে।
শহরের করোনা রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধির জেরে পুরসভার তরফে কোভিড সংক্রমণের কেন্দ্র খুঁজতে গিয়ে র্যানডম স্যাম্পল সার্ভের সিদ্ধান্ত নেন পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু বুধবার মুচিবাজার ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাগবাজার বস্তিতে ভয়ঙ্কর হারে সংক্রমণের রিপোর্ট আরও উদ্বেগ বাড়িয়ে দিল পুরকর্তাদের। কারণ, অধিকাংশ সংক্রমিত হলেন উপসর্গহীন। বাজার থেকে শহরের বহুতল আবাসন, মধ্যবিত্তের একক চার-পাঁচতলা বাড়ি এবং অভিজাত পরিবারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন।
এদিন মুচিবাজারের রিপোর্ট আসার পর যে সমস্ত ওয়ার্ডে এখন বেশি সংক্রমণ হচ্ছে সেই এলাকার বাজারে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে র্যানডম পরীক্ষায় জোর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন পুরমন্ত্রী। মুচিবাজারে আক্রান্ত ৫ জনকে স্বাস্থ্যভবন হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। পাঁচ বিক্রেতার দোকান বন্ধ রাখতে বলার পাশাপাশি রোগীর পরিবারের সদস্যদের পুরসভার নিজস্ব কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে গিয়েছেন বরোর কোঅর্ডিনেটর অনিন্দ্য রাউত। মুচিবাজারের তিনটি গেটে স্যানিটাইজিং টানেল ও প্রবেশপথে হ্যান্ডওয়াশ-বেসিন এদিনই দ্রুত চালুর নির্দেশ দিয়েছেন পুরমন্ত্রী।