দেশ জুড়ে দীর্ঘ ৮৩ দিনের লকডাউনের জেরে বিপর্যস্ত অর্থনীতি। তবে সেই ধাক্কা সামলে যখন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে জনজীবন, রাস্তায় নামছেন মানুষ, ঠিক তখনই ফের দৈনিক ভিত্তিতে জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ শুরু করল রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিগুলি। মাত্র দু’দিনে লিটারে এক টাকারও বেশি দাম বাড়ল পেট্রোল, ডিজেলের।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর পাশাপাশি দেশের অন্য মেট্রো শহরগুলিতেও গতকালই পেট্রোল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। মুম্বইতে এবং কলকাতায় পেট্রোলের দাম বেড়েছে লিটারে ৫৯ পয়সা। যার ফলে এই দুই শহরে রবিবার পেট্রলের দাম দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৭৮ টাকা ৯১ পয়সা এবং ৭৩ টাকা ৮৯ পয়সা। আর দক্ষিণের শহর চেন্নাইতে ৫৩ পয়সা দাম বেড়ায় এ দিন প্রতি লিটার পেট্রোলের জন্য ৭৬ টাকা ৭ পয়সা দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
আর প্রতি লিটার ডিজেলের দাম মুম্বই, কলকাতা এবং চেন্নাইতে বেড়েছে যথাক্রমে ৫৮ পয়সা, ৫৫ পয়সা এবং ৫২ পয়সা। রবিবার মুম্বইতে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ৬৬ টাকা ১৭ পয়সা এবং চেন্নাইতে ৬৮ টাকা ৭৪ পয়সা। তবে এখানে থেমে না থেকে রবিবারের ৫৯ পয়সার পরে সোমবার কলকাতায় পেট্রোল ৫৭ পয়সা বেড়েছে। হয়েছে ৭৪.৪৬ টাকা। ডিজেল ৫৫ পয়সার পরে আজ ৫৪ পয়সা বেড়ে ৬৬.৭১ টাকা।
স্বাভাবিকভাবেই করোনার আবহে রুজি-রোজগারে ধাক্কা খাওয়া সাধারণ মানুষ ইতিমধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিতে শুরু করেছেন। অনেকের অভিযোগ, লকডাউনের মধ্যে যখন বিশ্ব বাজারে তেলের দাম রেকর্ড তলানি ছুঁয়েছিল, তখন দেশে তেলের দর কমানো দূর অস্ত, ৮২ দিন ধরে একই রেখেছিল তেল সংস্থাগুলি। বরং গত মাসে লিটারে পেট্রলে ১০ টাকা ও ডিজেলে ১৩ টাকা উৎপাদন শুল্ক ও সেস বাড়িয়ে কোষাগার ভরেছে কেন্দ্র। যার জের বহন করতে হয়েছে তেল সংস্থাকে।
একাংশের ক্ষোভ, মানুষের ঘরবন্দী থাকার সুযোগ নিয়ে সেই সময়ে দাম কমানোর পথ খোলা হয়নি। আর যখন ফের কাজকর্ম শুরু হচ্ছে, তখন দর বাড়িয়ে মানুষকে চাপে ফেলার রাস্তা খোলা হল। কারণ উম্পুনের জেরে রাজ্যে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে ইতিমধ্যেই কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী খাদ্যশস্য, আনাজের দাম। ডিজেলের দর বৃদ্ধি তাকে ঠেলে তুললে আমজনতার বোঝা বাড়বে বই কমবে না।